রাশিয়া ও চীনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাইডেন-মাক্রোঁ ঐক্য
২ ডিসেম্বর ২০২২ফ্রান্সের প্রেসি়ডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যাবতীয় মতভেদ সরিয়ে রেখে পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্যের উপর জোর দিলেন৷ ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে তাঁরা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের উপর যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করার অঙ্গীকার করলেন৷ ওয়াশিংটনে মাক্রোঁর রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই শীর্ষ নেতা সেইসঙ্গে গণতন্ত্রের প্রতি সমর্থন জানাতে জোরালো ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক জোটের উপরও জোর দিয়েছেন৷ রাশিয়া ও চীনের মোকাবিলা করতে এমন ঐক্যের প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করেন৷ বাইডেন বলেন, ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি-সেভেনের সহযোগীদের সঙ্গে মিলে রাশিয়ার নৃশংস যুদ্ধের বিরুদ্ধে জোরালো ঐক্য দেখিয়ে চলেছে৷
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন যদি সত্যি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার কথা ভাবছেন, সে বিষয়ে আলোচনা করতে বাইডেন প্রয়োজনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রস্তুত৷ তবে পুটিন এখনো সে রকম কিছুই করেন নি বলে বাইডেন মনে করছেন৷ মাক্রোঁ সেই সঙ্গে বলেন, তারা কখনোই ইউক্রেনীয়দের এমন কোনো আপোশ মেনে নেবার জন্য চাপ দেবেন না, যা তাঁদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়৷ ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধসহ রাশিয়ার যাবতীয় পদক্ষেপ না ভুলে মস্কোকে কৈফিয়ত হবে বলে দুই নেতা মনে করেন৷ উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই ইইউ সমুদ্রপথে পাঠানো রাশিয়ার পেট্রোলিয়ামের মূল্যের ঊর্দ্ধসীমা স্থির করে দিয়েছে৷ ফলে ব্যারেল-প্রতি ৬০ ডলারের সেই মাত্রা না মানলে নানা শাস্তিমূলক পদক্ষেপের বিধান রাখা হয়েছে৷
মার্কিন প্রশাসন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়াতে সে দেশের কোম্পানিগুলির জন্য যে বিশাল অংকের ভরতুকির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ফ্রান্স তথা ইউরোপে সেই পদক্ষেপের জোরালো বিরোধিতা পশ্চিমা ঐক্যের পথে কাঁটা হয়ে উঠছে৷ তবে প্রায় দুই ঘণ্টার আলোচনার পর দুই নেতা আপাতত সেই সংঘাত কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়েছে৷ বাইডেন বলেন, তারা অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে সাপ্লাই চেন, উৎপাদন ও উদ্ভাবনের মধ্যে সমন্বয় করতে কিছু বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের বিষয়ে আরো আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তবে বাইডেন ‘ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট’ প্রত্যাহারের কোনো আশ্বাস দেননি৷ বাইডেন শুধু সামান্য রদবদলের মাধ্যমে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে বৈষম্য দূর করার অঙ্গীকার করেছেন৷ ফলে ইউরোপও পালটা পদক্ষেপ হিসেবে নিজস্ব ‘গ্রিন ইকোনমি’ ক্ষেত্রে ভরতুকির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না৷
চীন সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে এতকাল মতপার্থক্যও ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে৷ বাইডেন ও মাক্রোঁ এ ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সমন্বয় আরও বাড়ানোর অঙ্গীকার করেন৷ বিশেষ করে নিয়ম ভিত্তিক আন্তর্জাতিক কাঠামোর প্রতি চীনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর৷ তবে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বেইজিং-এর সঙ্গে সহযোগিতার পথ থেকে সরে আসা হবে না৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)