রাশিয়াকে চিঠি ন্যাটো-অ্যামেরিকার
২৭ জানুয়ারি ২০২২রাশিয়াকে এবার লিখিত বিবৃতি দিল ন্যাটো এবং অ্যামেরিকা। চিঠিতে কী লেখা হয়েছে, তা সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ইউক্রেন সীমান্তে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তারা দ্রুত তার সমাধান চাইছেন। সে কারণেই চিঠির বয়ান প্রকাশ করা হলো না। তাদের আশা, রাশিয়া চিঠির জবাবে আলোচনায় বসতে সম্মত হবে।
রাশিয়ার দাবি
গত মঙ্গলবার রাশিয়া সীমান্ত সংঘাত নিয়ে তাদের স্পষ্ট অভিমত জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, কোনোভাবেই ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা যাবে না। অ্যামেরিকা এবং ন্যাটোকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। জানাতে হবে, ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়ে ইউক্রেনের রাস্তা সবসময়ের জন্য বন্ধ। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়ার দাবি ছিল, পূর্ব ইউরোপে যেভাবে অ্যামেরিকা এবং ন্যাটো সৈন্য মোতায়েন করছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। সরিয়ে নিতে হবে যুদ্ধ জাহাজ এবং বিমান।
রাশিয়ার এই দাবির জবাবেই চিঠি পাঠিয়েছেন ন্যাটো এবং অ্যামেরিকা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন অবশ্য একটি কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ন্যাটোয় ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রাশিয়া যে প্রতিশ্রুতি চেয়েছে, তা মানা সম্ভব নয়। ন্যাটোর দরজা সকলের জন্যই খোলা। রাশিয়াকে এবিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বলা হয়েছে, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়া সেনা প্রত্যাহার করলে পূর্ব ইউরোপে অ্যামেরিকা এবং ন্যাটো যে সেনা মোতায়েন করেছে, তা প্রত্যাহার করা হবে। ব্লিংকেন আশা প্রকাশ করেছেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী হবেন। চিঠিতে নিজেদের মত স্পষ্ট করে উল্লেখ করে ন্যাটোর বক্তব্য নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে ব্লিংকেন এবং ন্যাটোর প্রধান জানিয়েছেন।
রাশিয়া অবশ্য প্রথম থেকেই নিজেদের বক্তব্যে অবিচল। তাদের বক্তব্য, ইউক্রেনকে কোনোভাবেই ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তাদের এই মত না মানা পর্যন্ত সীমান্ত থেকে তারা সেনা প্রত্যাহার করবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল। বস্তুত, শেষ ন্যাটোর বৈঠকে রাশিয়া জানিয়েছিল, তাদের দাবিগুলি না মানলে পরবর্তী ন্যাটোর বৈঠকেও তারা যোগ দেবে না।
এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে গত কয়েকদিনে উত্তেজনা আরো বেড়েছে বলেই ইউক্রেনের দাবি। রাশিয়া সেনা মহড়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, ইউক্রেনের ভিতরে তারা সেনা পাঠায়নি। নিজেদের আত্মরক্ষার তাগিদেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি
এরই মধ্যে রাশিয়া জানিয়েছে, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে ইউক্রেন, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসা খুবই কঠিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা ২০১৪ সালের চুক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ওই চুক্তিতে স্থির হয়েছিল, পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির নীতি মেনে চলবে।
বস্তুত, পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তে দুই দেশই যুদ্ধের জন্য সেনা সাজিয়ে রেখেছে। তারপরেও রাশিয়ার এই বক্তব্য আলোচনার রাস্তা খোলা রাখছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি, এপি)