রাষ্ট্র না হয়েও বিচ্ছিন্ন
ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোটার এক গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছেন৷ অনেক বছর ধরেই অবশ্য এই অঞ্চল কার্যত স্বাধীনতা ভোগ করছে৷ গোটা অঞ্চলে এমন আরও কয়েকটি দৃষ্টান্তের দিকে নজর দেওয়া যাক৷
ইরাকি কুর্দিস্তান
১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধ ও ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলার ফলে বিপর্যস্ত সাদ্দাম হুসেনের প্রশাসন উত্তরে কুর্দি এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ ধাপে ধাপে হারিয়ে ফেলে৷ কুর্দিরাও সেই সুযোগে নিজস্ব পতাকা, সরকার, সংসদ ও সেনাবাহিনী গড়ে তুলে এক রাষ্ট্রীয় কাঠামো সৃষ্টি করে৷
দক্ষিণ সুদান
২০১১ সালের জুলাই মাসে বিশ্বের সবচেয়ে নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার আগে দক্ষিণ সুদানও বেশ কিছুকাল কার্যত স্বাধীনতা ভোগ করেছে৷ ২০০৫ সালের এক শান্তি চুক্তির আওতায় এক গণভোটে দক্ষিণের মানুষ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেন৷ ১৯৮৩ সালের গৃহযুদ্ধের সময়েই বিচ্ছিন্নতাবাদের এই বীজ বপন করা হয়েছিল৷
লিবিয়ার পূ্র্বাঞ্চল
২০১১ সালে মুয়াম্মার আল গদ্দাফির পতনের পরেই লিবিয়ায় অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ে৷ ত্রিপোলি শহরে যে প্রশাসন গঠিত হয়, তার আনুগত্য মানতে নারাজ ছিল দেশের পূ্র্বাঞ্চলের উপজাতীয় নেতারা৷ মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশের মদতে তোবরুক শহরে এক সমান্তরাল প্রশাসন উগ্র ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাচ্ছে৷
উত্তর ইয়েমেন
২০১৪ সালে সর্বশেষ গৃহযুদ্ধের ফলে আবারও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আরব উপদ্বীপের সবচেয়ে গরিব দেশ ইয়েমেন৷ ইরানের মদতে রাজধানী সানা ও দেশের উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে শিয়া সম্প্রদায়ের বিদ্রোহীদের হাতে৷ ইয়েমেনের সরকারের অস্তিত্ব শুধু দেশের দক্ষিণাচলেই সীমিত রয়েছে৷ উল্লেখ্য, ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ ইয়েমেন স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক দেশ ছিল৷
সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল
দীর্ঘ ও জটিল গৃহযুদ্ধের জের ধরে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি সম্প্রদায় কার্যত এক স্বাধীন ছিটমহল গড়ে তুলেছে৷ পিওয়াইডি নামের সিরীয় কুর্দি গোষ্ঠী সেই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে৷ ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধের সময় থেকেই বাশার আল আসাদ প্রশাসনের সঙ্গে তাদের একটা বোঝাপড়া রয়েছে৷ মার্কিন বিমান হামলার সুযোগ নিয়ে পিওয়াইডি-র সামরিক বাহিনী ওয়াইপিজি আইএস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে৷