রাহুল আনন্দের বাড়ি: অতীত-বর্তমান
৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ‘জলের গান’-এর সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী ও বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে৷ ছবিঘরে বাড়িটির অতীত ও বর্তমান কিছু ছবি৷
৫ আগস্ট কী হয়েছিল
বাড়িটির অবস্থান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে৷ ৫ আগস্ট দুপুরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়৷ বিকেল ৩টায় হঠাৎ করেই সেনাবাহিনীর প্রটোকল উঠে যায় সেই সড়ক থেকে৷ এরপর নামে জনস্রোত৷ বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা চালানোর পর আশপাশের ভবনে ঢুকে পড়ে অসংখ্য মানুষ৷ রাহুল আনন্দের বাড়িটা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের ঠিক দেড়শগজের মধ্যে৷ তাই সেখানেও ঢুকে পড়ে তাদের বাড়ি ছাড়তে বলা হয়৷
এক কাপড়ে ঘরছাড়া
স্ত্রী ঊর্মিলা শুক্লা ও ১৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়েছে শিল্পী রাহুল আনন্দকে৷
ভস্মীভূত তিন হাজার বাদ্যযন্ত্র
দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগে রাহুলের বাড়িতে থাকা তিন হাজারের মতো বাদ্যযন্ত্র ভস্মীভূত হয়েছে৷ এ বাড়িতেই ‘জলের গান’-এর বহু গান রচনা ও সুর করেছেন রাহুল আনন্দ৷
স্টুডিও লুট
বসবাসের পাশাপাশি বাড়িটিকে স্টুডিও হিসেবেও ব্যবহার করতেন৷ এই স্টুডিওতে রেকর্ডিং, মিক্সিং থেকে এডিটিং—সব কাজই করেছে জলের গান৷ সেখানকার যন্ত্রপাতি সব লুট হয়ে গেছে৷
এখন কেবল স্মৃতি
বর্তমানে ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাড়িটা যেন কঙ্কালে পরিণত হয়েছে৷ দুর্বৃত্তের ক্রোধ ও প্রতিহিংসার আগুনে বাড়িটির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই৷
‘শান্তি আসুক সোনার দেশে’
দৈনিক প্রথম আলোকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি বার্তা পাঠান রাহুল আনন্দ৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘তবু শান্তি আসুক আমার সোনার দেশে, যেকোনো মূল্যে৷ সে মূল্য যদি হয় আমার সোনার সংসারের পোড়া ছাই অথবা বাদ্যযন্ত্র পোড়া কয়লার বিনিময়ে, তাতেও দুঃখ নেই৷ ভালোবাসি বাংলা আর বাংলার মানুষকে, আমি বাংলায় গান গাই৷’’
শত বছরের পুরোনো বাড়ি
১৪০ বছরের পুরোনো বাড়ি৷ বাড়ির গা ঘেঁষে নানান গাছপালা ঘিরে আছে, সেখানে পাখির কিচিরমিচির শোনা যায়৷ লম্বা বারান্দায় ঝুলত সলতে দেওয়া কুপিবাতি, হারিকেন, পুরোনো চিঠির বাক্স, গাছ কিংবা নানা চিত্রকর্ম৷ একতলা বাড়ির বারান্দার আরেক কোণে সাজানো ছিলো পিতল আর কাঠের তৈরি নানা শৈল্পিক সামগ্রী৷ দেয়ালে ছিলো দোতারাও৷
আনাচে কানাচে নানা শিল্পকর্ম
বাড়ির আনাচকানাচে ছড়িয়ে ছিল নানা শিল্পকর্ম৷
দেয়ালে বাদ্যযন্ত্র
পিতল আর কাঠের তৈরি নানা শৈল্পিক সামগ্রী৷ দেয়ালে ছিলো দোতারাও৷
ঠিকানাই কি আক্রোশের কারণ?
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আরেক প্রকৌশলীর বাড়িতেও একই ঘটনা ঘটেছে৷ তিনিও অন্যের সহযোগিতায় এক কাপড়ে বেরোতে পেরেছিলেন৷ তার বাড়িতেও কিছু অবশিষ্ট নেই৷ জলের গান তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লিখেছে, ‘‘তবে কি এই ঠিকানায় আবাস হওয়াটাই কিছু মানুষের এত ক্ষোভের কারণ? এত রাগের বহিঃপ্রকাশ?’’
আন্দোলনে সরব ছিলেন
রাহুল আনন্দ ও জলের গানকে বরাবরই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সরব দেখা গেছে৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ঢাকার রবীন্দ্র সরোবরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি৷