রেমিটেন্স অবৈধভাবে পাঠালে ‘শাস্তি'র হুঁশিয়ারি
১৭ নভেম্বর ২০২২রেমিটেন্স অবৈধভাবে পাঠালে ‘শাস্তি'র হুঁশিয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের৷
এর মধ্যে শুধু বুধবারই মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর দুই শতাধিক হিসাব ‘সাময়িক বরাখাস্ত' করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷এমন পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রবাসী আয় অবৈধভাবে দেশে পাঠানোদের বিরুদ্ধে ‘শাস্তি' নেওয়া হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷
বুধবার বরখাস্ত হওয়া এমএফএস হিসাবগুলোর মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয় যাতে নগদায়ন করতে না পারে সেজন্য এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়৷ পরে শর্ত পালন করতে পারলে প্রবাসী আয় উত্তোলনের সুযোগ দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷
এ নিয়ে অবৈধ পথে প্রবাসী আয় দেশে পাঠানোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে হাজার পাঁচেক এজেন্টশিপ বরখাস্ত করল বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ৷
এমএফএসের ৪৮০টি হিসাবে লেনদেন স্থগিতের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘বৈধ চানেল ব্যবহার করে অবৈধ হুন্ডি প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউ সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য সবসময় পর্যবেক্ষণ করে৷ নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই এমন পদেক্ষপ নেওয়া হয়েছে৷’’ সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসব এমএফএস হিসাবের মধ্যে অনেকগুলো বিকাশ ও নগদ এর এজেন্ট রয়েছে৷
এ বিষয়ে বিকাশ এর মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘‘বুধবার দিন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ তাই মন্তব্য করা যাচ্ছে না৷ বৃহস্পতিবার দিনের যেকোনো সময়ে জানানো সম্ভব হবে, যদি এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য থেকে থাকে৷''
আর নগদ এর পাবলিক কমিউনিকেশন্সের সিনিয়র ম্যানেজার লিংকন মো. লুৎফুজ্জামান সরকার বলেছেন, ‘‘নগদ এর কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য বা নিদের্শনা বাংলাদেশ ব্যাংক বা বিএফআইইউর কাছ থেকে আসেনি এখনও৷’’
অবৈধপথে রেমিটেন্স, নতুন সতর্কবার্তা
সাম্প্রতিক সময়ে বৈধপথে রেমিটেন্স আসা কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়া অবৈধপথে হুন্ডির মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে৷
বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ‘‘প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের প্রিয়জনদের জানানো যাচ্ছে যে, কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
‘‘আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে/ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন৷’’ এতে বলা হয়, অবৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে৷
করোনা মহামারীর সময় অবৈধ চ্যানেল বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স অনেক বেশি আসে৷ কিন্তু সংক্রমণ কমে আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আসা কমতে থাকে৷
এর বড় কারণ হুন্ডির মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠালে মুদ্রার বিনিময় হার বেশি পাওয়া যায়৷ আবার প্রবাসীর পাঠানো অর্থ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যায় স্বজনরা৷ এসব কারণে প্রবাসীদের অনেকেই এখনও বৈধ পথে না গিয়ে অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠাচ্ছেন৷ এর সঙ্গে এমএফএসগুলোর জড়িত থাকার তথ্যও পেয়ে এর আগে ব্যবস্থাও নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক৷
এমন অবস্থায় বৈধ পথে রেমিটেন্স দেশে পাঠাতে প্রণোদনাসহ নানা ধরনের নীতি সহায়তাও দেয় সরকার৷ এরপরও রেমিটেন্স কমছে চলতি অর্থবছরে৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)