রেসিপি – সুখী হতে হলে কিছুটা হতাশ হন
৫ ডিসেম্বর ২০১৪বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী রুনা লায়লার একটি গান আছে৷ যেটি আজও অনেকে গুন গুন করে গান, ‘সুখ তুমি কী বড় জানতে ইচ্ছে করে'৷ সত্যিই যুগ যুগ ধরে মানুষ জানতে চেয়েছে সুখের বিশ্লেষণ৷ জানতে চেয়েছে সুখী হওয়া যায় কী করে৷ কিন্তু একেক জনের কাছে একেক উত্তর৷ আর তাই সুখের বসতির খোঁজ পাওয়াটা সব সময় থেকেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে৷
কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কী? আর তাই এ বিষয়ে পৃথিবীর খ্যাতিমান একশ জন গবেষক সুখের তত্ত্ব তালাশ করেছেন গবেষণা গ্রন্থটিতে৷ ওয়ার্ল্ড বুক অফ হ্যাপিনেসের অন্যতম গবেষক নেদারল্যান্ডসের রটারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুট ফেনহোফেন৷ তিনি বলছেন, সুখ বিষয়টি আসলে জীবনের মানসিক উপলব্ধি৷ তিনি তাঁর নিজস্ব মাপকাঠি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে সুখী৷ তাঁর বিচারে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশ কোস্টারিকা৷ এরপর আছে ডেনমার্ক৷ পরেই যৌথ অবস্থানে আছে ক্যানাডা এবং সুইজারল্যান্ড৷ যে দেশ প্রায় প্রতি বছরই সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান, সেই নরওয়ের অবস্থান এর পরেই৷ টোগো, তানজানিয়া এবং জিম্বাবোয়ের মানুষের সুখের প্রাচুর্য কম৷ ফলে তারা আছে সর্বনিম্ন স্থানে৷ তিনি বলেন, ‘‘সুখটা একা একা জন্ম নেয় না৷ সামগ্রিক বিবেচনাতেই আপনা আপনি মনে হবে সুখী-অসুখীর ব্যাপারটি৷'’
অনেক গবেষকই বলছেন, ‘‘আপনার কত অর্থ প্রতিপত্তি আছে, সেটাও খুব একটা আমলে আসে না, ধর্তব্যে আসে না প্রাচুর্যের বিষয়টিও৷'' গবেষক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্ট লেন-এর বক্তব্য অনেকটা এই রকম৷ তিনি বলছেন, যখন মানুষ তাদের দারিদ্র্যকে পিছনে ছুঁড়ে ফেলে দেয়, তখন অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা হন সুখী৷ এক্ষেত্রে অনেক বেশি আয়ও সুখী হবার বিচারে আসে না৷
যাহোক সেই বইতে অনেকে অনেক কথা বলেছেন৷ তবে সুখী কী করে হবেন তার কিছু রেসিপিও বাতলে দিয়েছেন তাঁরা৷ তারা বলছেন, সুখী হতে হলে প্রয়োজন খুবই ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বাসী বন্ধু, একটি স্থির প্রেমময় জীবন, নিজের যোগ্যতা অনুসারে একটি নিশ্চিত পেশা, জীবন চালিয়ে নেবার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ, দিনে অন্তত তিনটি ইতিবাচক অভিজ্ঞতা এবং নিজের যা অর্জন তার প্রতি কৃতজ্ঞতা৷
এই রেসিপিকে আরও একটু উন্নত করতে আরও পাঁচ তরিকা আছে৷ এগুলো হলো, এক বা একাধিক সন্তান গ্রহণ, বিধাতার উপর বিশ্বাস, অতিরিক্ত শিক্ষা, ভালো স্বাস্থ্য এবং সঙ্গে কিছুটা হতাশা৷