রেস্তোরাঁয় ঢুকতে পারলেন না নিকাব পরা নারী
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬বুধবার আঙ্গেলা ম্যার্কেলও বোরকা ও নিকাব নিয়ে মন্তব্য করেছেন৷ বার্লিনে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা' শীর্ষক এক সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন৷ ৮০টি দেশের সংসদ সদস্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে ম্যার্কেল বলেন, কোনো সমস্যার খুব সহজ সমাধান খুঁজে নিলেও সময়ের চাকাকে উলটো দিকে ঘুরানো যায় না৷ এমন চেষ্টার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে সবাইকে সতর্কও করেছেন তিনি৷ এ সময় ধর্মীয় বিরোধ অতীতে জার্মানির ইতিহাসকে যে কলঙ্কিত করেছে, সে বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন যে, বোরকা এবং নিকাব জার্মান সমাজে শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্তির পথে অনেক ক্ষেত্রেই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ ম্যার্কেলের মতে, এ ধরনের পোশাক সব জায়গাতেই পরা যাবে কিনা – সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত৷
নিকাব পরা নারীকে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে না দেয়ার ঘটনাটি গত শনিবারের৷ নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের বিলেফেল্ডের একটি রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন এক নারী৷ সেই নারীকে রেস্তোরাঁর মালিক ক্রিস্টিয়ান শুলৎস মুখ দেখানোর অনুরোধ করে বলেন, চেহারা না দেখলে তিনি ঢুকতে দেবেন না৷ শুলৎসের দাবি, তাঁর কথা শুনেই চেঁচামেচি শুরু করে দেন ওই নারী৷ কিছুক্ষণ পরে রেগেমেগে চলে যান তিনি৷
বিষয়টি আর রেস্তোরাঁর ওই এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই৷ স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকে ইতিমধ্যে ছাপা হয়েছে খবরটি৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয় নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা৷ সমালোচকরা বলছেন, রেস্তোরাঁ মালিক খুবই ‘বর্ণবাদী' আচরণ করছেন, এমন আচরণ মেনে নেয়া যায়না৷ অন্যদিকে রেস্তোরাঁর নিয়মিত খদ্দেরদের অনেকেই দাঁড়াচ্ছেন রেস্তোরাঁ মালিক ক্রিস্টিয়ান শুলৎসের পাশে৷ শুলৎস-ও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমি কোনো অন্যায় করিনি, শুধু আমার অধিকার চর্চা করেছি৷''
তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে শুলৎস জানানন, তিনি বহুবার নব্য নাৎসিদের পোশাক ‘টোর স্টাইনার' পরা লোকজনকেও রেস্তোরাঁয় ঢুকতে দেননি৷ জানা গেছে, ওই রেস্তোরাঁর কর্মীদের অনেকেই নাইজেরিয়া, ঘানা, পাকিস্তান এবং পর্তুগাল থেকে এসেছেন৷
জার্মানিতে মুসলিম নারীদের শুধু চোখ দেখানো পোশাক নিকাব বা শুধু মুখ দেখানো বোরকা নিষিদ্ধ নয়৷ তবে পোশাকগুলো নিষিদ্ধ হওয়া উচিত কিনা – এ নিয়ে এ দেশেও পরস্পরবিরোধী জনমত রয়েছে৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, ইপিডি, কেএনএ)