1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি

১৩ অক্টোবর ২০১৭

সহিংসতা থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অং সান সু চি৷ পাশাপাশি সংঘাতপ্রবণ রাখাইন রাজ্যে শান্তি ফেরাতে নতুন কমিটি করার ঘোষণাও দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/2llOD
Myanmar interreligiöse Demonstration in Yangon
ছবি: Reuters/S. Z. Tun

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে পুলিশ চেকপোস্টে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইনে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের উপর অভিযান শুরু করে সেদেশের নিরাপত্তা বাহিনী৷ সেই ঘটনার পর পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে৷ রোহিঙ্গাদের এই যাত্রা এখনো অব্যাহত রয়েছে৷

‘রোহিঙ্গা' শব্দটি ব্যবহার করেননি সু চি

শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ার কথা স্বীকার করেছেন সু চি৷ মিয়ানামারের এই অবিসংবাদিত নেতা চলমান সংকট নিরসনে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন৷ তিনি জানান যে, তাঁর সরকার বাংলাদেশে এখন যারা আছে তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সেদেশের সঙ্গে আলোচনা করছে৷ তবে তিনি বক্তব্য দেয়ার সময় ‘রোহিঙ্গা' শব্দটি উচ্চারন করেননি৷ আর তাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি নিয়েও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে, যা তিনি পরিষ্কার করেননি৷ এর আগে সেদেশের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে, শুধুমাত্র তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে, যাদের মিয়ানমারে বসবাসের অনুমতিপত্র রয়েছে৷ এরকম অনুমতিপত্র খুব কম রোহিঙ্গার রয়েছে৷

মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের সেদেশের কোনো জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচনা করে না৷ বরং তাদের ভাষ্য হচ্ছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে সেদেশে গেছে এবং বসবাস করছে৷ সু চি অবশ্য তাঁর বক্তব্যে বলেছেন যে, বাংলাদেশ থেকে যাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে, তাদের পুনর্বাসনের জন্য রাখাইনে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে৷ মিয়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চল হচ্ছে এই রাজ্য৷ সেখানে দেশি এবং বিদেশি সংগঠনগুলোর ত্রাণ কর্মকাণ্ডে সমন্বয় এবং দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি ফিরিয়ে আনতে একটি নতুন কমিটির নেতৃত্বও দেবেন সু চি৷

ইসলামি দাতব্য সংগঠন নিষিদ্ধ

এদিকে, বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিনটি ইসলামিক দাতব্য সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ৷ এগুলোর মধ্যে মুসলিম এইড এবং ইসলামিক রিলিফ আন্তর্জাতিক সংগঠন, অন্যদিকে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন একটি স্থানীয় সংগঠন৷ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যাতে কেউ উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করতে না পারে, সেজন্য এসব সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ মেহজাবিন খালেদ৷

তবে এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ খালেদ বলেন, ‘‘নিরাপত্তার কারণে কারা সেখানে ত্রাণ দিচ্ছে এবং কেন দিচ্ছে, তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি৷ কারা তাদের অর্থায়ন করছে, এবং তারা টাকা দিয়ে কী করছে?''

নিষিদ্ধের তালিকায় নাম ওঠার পর ইসলামিক রিলিফের পরিচালক ওয়াসিম আহমেদ জানিয়েছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তোলা হলেও তা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর৷ কেননা, সংগঠনটি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে এখনো ত্রাণ তৎপরতা শুরুই করেনি৷ তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু আমরা এখনো সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় আছি এবং সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পগুলোতে কোনো প্রকল্প এখনো শুরু করিনি, তাই আমরা যা করিনি, তার সঙ্গে আমাদের নাম যুক্ত করলে তা অন্যায় হবে৷''

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সরকারের বেসরকারি উন্নয়নসংস্থা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান এনজিও ব্যুরো এখন অবধি ত্রিশটি দেশি, বিদেশি সংগঠনকে রোহিঙ্গাদের সহায়তার করার অনুমতি দিয়েছে৷ এসব সংগঠন শুধুমাত্র দুই মাসের জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে৷

এআই/এসিবি (এপি, এএফপি)