রোমের গ্রিক দূতাবাসে পার্সেল বোমা
২৭ ডিসেম্বর ২০১০গ্রিক দূতাবাসে যে পার্সেল বোমা রয়েছে তা যেভাবে জানা গেল
ইটালির গণমাধ্যমগুলোই প্রথম এই ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়৷ তবে একই সঙ্গে রোমের মোনাকো ও ভেনেজুয়েলার দূতাবাসে যে দুটি সন্দেহভাজন প্যাকেট পাওয়া গেছে, তাতে কোন বোমা ছিলনা৷ ইটালির গণমাধ্যমগুলো ডেনমার্ক, মরোক্কো, সুইডেন, এবং ইউক্রেনের দূতাবাসে বোমা নিয়ে সতর্কতার কথা উল্লেখ করে৷ তবে সৌভাগ্যবশত এই দূতাবাসগুলোতেও বোমা পাওয়া যায়নি৷
গ্রিক পক্ষের প্রতিক্রিয়া
ইটালিতে গ্রিসের রাষ্ট্রদূত মাইকেল কাম্বানিস-এর বরাত দিয়ে লা রিপাবলিকা ডেইলির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘‘পার্সেল বোমাটি গত শুক্রবারে পৌঁছেছে, তবে বড়দিনের ছুটি থাকায় তা আগে খোলা হয়নি৷'' গ্রিক রাষ্ট্রদূত বলেন, রোমে পুলিশের মুখপাত্র সালভাতরে কাগনাজ্জো বলেছেন, ‘‘গত সপ্তাহে চিলি এবং সুইস দূতাবাসে যে বোমা দুটি বিস্ফোরিত হয়, এই পার্সেল বোমাটিও সেগুলোর মতোই৷'' তিনি বলেন,‘‘দূতাবাসের ডাক কর্মীরা প্যাকেটটি খোলেন৷ তবে এতে কোন বিস্ফোরণ ঘটে নি৷'' বোমা বিশেষজ্ঞরা সঙ্গে সঙ্গে এটি নিস্ক্রিয় করেন৷ প্যাকেটের মধ্যে পাওয়া গেছে, একটা বড় হলুদ খাম, আর তারমধ্যে ছিল একটি সিডি কভার৷ ইটালির আধা সামরিক পুলিশ বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এই ঘটনার সঙ্গে নৈরাজ্যবাদীদের জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন নি৷ তিনি অবশ্য বলেন যে, তদন্তকাজ এখনও চলছে৷
সোমবারের এই ঘটনার পরে আইনজীবীরা বলছেন, গত সপ্তাহের বোমাগুলো নিয়ে তাঁরা যে ‘সন্ত্রাসবাদ' সম্পর্কিত তদন্ত শুরু করেছেন, গ্রিক দূতাবাসের প্যাকেট পাবার ব্যাপারটিও এখন সেগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে৷
কারা এইসব পার্সেল বোমা পাঠানোর চেষ্টা করছে?
রোমে পার্সেল বোমা পাঠানোর ঘটনাগুলো থেকে স্থানীয় নৈরাজ্যবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর দিকেই দৃষ্টি পড়েছে৷ গ্রিসে, ইটালিতে আর্থিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে সরকারের কঠোর ব্যয়সংকোচ ব্যবস্থার কারণে সামাজিক উত্তেজনা বাড়ছে৷ আর তা থেকে ফায়দা তুলতে চাইছে এ ধরণের নৈরাজ্যবাদী গ্রুপগুলো৷ আপনাদের হয়ত মনে আছে, গত মাসে গ্রিক উগ্র বাম জঙ্গিরা অন্য দেশের সরকারদের কাছে এবং এথেন্সে বিদেশী দূতাবাসে পার্সেল বোমা পাঠিয়েছিল৷ গত সপ্তাহে সুইস আর চিলির দূতাবাসে পার্সেল বোমা পাঠানোর দায়িত্ব দাবি করে লিপি পাঠিয়েছিল ইনফর্ ম্যাল অ্যানার্কিস্ট ফেডারেশন নামের একটি গ্রুপ৷ লিপিতে সই দিয়েছিল লাম্ব্রোস ফৌন্টাস বিপ্লবী সেল৷ ইটালির মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে এথেন্সে গ্রিক পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত একজন গ্রিক নৈরাজ্যবাদী হল এই লাম্ব্রোস ফৌন্টাস৷
এ ব্যাপারে নিরাপত্তার ব্যবস্থা
সতর্কতার কোন কমতি নেই৷ রোমে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ৷ বিদেশে ইটালির দূতাবাসগুলোতেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক