1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা নিয়ে জাতিসংঘে যে যা বললেন

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আট বছর পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হলো বৃহস্পতিবার৷ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স অবিলম্বে জাতিগত নিধন বন্ধ করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2kwnb
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলছে (ফাইল ছবি)ছবি: Getty Images/AFP/K. Betancur

তবে চীন ও রাশিয়া মিয়ানমার সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের লক্ষ্যে শক্ত পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান৷ এছাড়া অবিলম্বে রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে এবং সেখানে ত্রাণকর্মীদের ঢুকতে দিতে মিয়ানমার সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন৷ পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদে নিজেদের ঘরে ফিরতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব৷ তিনি আশংকা প্রকাশ করেন, উত্তর রাখাইনে সহিংসতা বন্ধে উদ্যোগ না নিলে তা রাজ্যের কেন্দ্রীয় অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ সেখানে প্রায় আড়াই লক্ষ মুসলমান বাস করেন৷

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, মানবাধিকার সংকট থেকেই ‘ব়্যাডিকালাইজেশন’ এর মতো বিষয়ের শুরু হয়৷ এছাড়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে চোরাচালানসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়৷

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হেলি বলেন, ‘‘বার্মা কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপকে নিষ্ঠুর ও দেশের সংখ্যালঘু গোষ্ঠী নিধনের উদ্যোগ বলতে আমাদের ভয় পেলে চলবে না৷’’ তিনি বলেন, ‘‘এই পরিষদের বৈঠকে ভালো অর্থ বহন করা কথাবার্তা ও কূটনৈতিক শব্দ ব্যবহারের সময় শেষ হয়ে গেছে৷ আমাদের এখন মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে৷’’ রোহিঙ্গাদের উপর বর্বর হামলা চালানো নিরাপত্তা কর্মীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে সব দেশকে অনুরোধও জানান তিনি৷

তবে জাতিসংঘে চীনের উপ-রাষ্ট্রদূত য়ু হাইতাও মিয়ানমার সরকার যে জটিল চ্যালেঞ্জের মুখে আছে তা নিরপেক্ষ দৃষ্টি ও ধৈর্য্য নিয়ে বিবেচনা করে দেখতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, রাখাইনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দীর্ঘসময় ধরে সৃষ্টি হয়েছে এবং চট করে এই সংকটের সমাধান হবে না৷

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া সবাইকে সতর্ক করে বলেন, মিয়ানমার সরকারের উপর ‘অত্যধিক চাপ’ প্রয়োগ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে৷ রাখাইনে ‘দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ও জটিল’ সমস্যার সমাধানে আলোচনা ও রাজনৈতিক উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই৷

মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উ থাউং তুন দাবি করেছেন, মিয়ানমারে কোনো জাতিগত নিধন চলছে না৷ সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের পর রাখাইনে কোনো সামরিক অভিযান চলেনি বলেও জানান তিনি৷ তবে এরপরও যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন সে প্রসঙ্গে তুন বলেন, সন্ত্রাসীরা ঐ ব্যক্তিদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেয়ায় তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছেন৷ মিয়ানমারে থাকা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও গণমাধ্যম কর্মীরা সোমবার উত্তর রাখাইন পরিদর্শনে যাবেন বলেও জানান তিনি৷ জাতিসংঘের মহাসচিবকেও মিয়ানমার সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান উ থাউং তুন৷ তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের ৫০ শতাংশেরও বেশি গ্রামে মানুষজন প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছেন৷

তবে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ মোমেন নিরাপত্তা পরিষদকে জানান, মিয়ানমার সরকার দাবি করলেও রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ হয়নি৷ তিনি বলেন, ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের পালাতে বাধ্য করা হয়েছে বলে রোহিঙ্গারাই জানিয়েছেন৷ মাসুদ মোমেন বলেন, রাখাইনে যে নৃশংসতা চলছে তা একটি বিষয় প্রমাণ করে যে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে উত্তর রাখাইনকে জনশূন্য করে সেখানকার জমির মালিকানা দখলের পরিকল্পনা করছে৷

জেডএইচ/এসিবি (এপি)

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...