একটি মানব ট্র্যাজেডির ট্রেলার!
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭একবিংশ শতাব্দীটাই যেন বিতাড়ন আর পলায়নের শতাব্দী – তার পিছনে জাতি, ধর্ম, অতীত ইতিহাস বা বর্তমান রাজনীতি, যা-ই কাজ করুক না কেন৷ কে জানে, ধর্মের উৎস খুঁজতে গেলেও আমরা শেষমেষ এই ধরনের বিতাড়ন ও পলায়নের কাহিনির সম্মুখীন হব কিনা৷
বাড়িঘর পুড়ছে, পুড়ছে একটি আস্ত গ্রাম৷ আগুন লাগিয়েছে দৃশ্যত মিয়ানমার সেনাবাহিনী৷ ভিডিও-র সূত্রধর বলছেন, সেনারা একটির পর একটি বাড়িতে আগুন দিয়েছে, একটি জ্বলন্ত কুটিরের সামনে বলছেন, ‘এটা আমার বাড়ি৷' সম্ভবত ভিডিও-র সবচেয়ে ব্যক্তিগত মুহূর্ত৷
সেনাবাহিনী নাকি বলছে, বিদ্রোহীরাই এর জন্য দায়ী৷ ২০০৬ সালেও তারা এমনই বলেছিল৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সূত্রে স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি দিয়ে দেখানো হচ্ছে ধ্বংসের পরিমাণ৷ এরপর আবার একটি স্থানীয়, ব্যক্তিগত উল্লেখ – সিমবায়া নামের শেষ বসতিটিও এখন জ্বলছে৷
এবার কিছু পরিসংখ্যান: ৬০,০০০ উদ্বাস্তু সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে গেছেন; নো-ম্যানস-ল্যান্ডে আটকা পড়েছেন আরো ১০,০০০৷ জাতিসংঘ কি বলেছে, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান কি বলেছেন...
এ সবই শব্দ এবং অনুলিপি, এক মিনিট পাঁচ সেকেন্ডের ভিডিওটি জুড়ে৷ তথ্য সংগ্রহ, পরিবেশন ও বিস্তারের এই যে পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা, তার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের এই মানব ট্র্যাজেডি – মানবিক ট্র্যাজেডির চেয়েও যা বড় – তার সম্পর্ক কোথায় বা কতটুকু?
আমরা যারা মিডিয়ায় কাজ করি, তাদের দায়িত্বই বা কী? আর কবি-সাহিত্যিক-সমাজসেবী? দেশবিদেশের সরকার? নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী? জাতিসংঘ? পোপ? ইউরোপীয় ইউনিয়ন?
পথের পাঁচালীর অপুকে যদি এইরকম ধোঁয়া, আগুন আর হত্যাকাণ্ডের মধ্যে নিশ্চিন্দিপুর ছাড়তে হতো?
এসি/এসিবি