রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর পরিকল্পনায় নতুন সংকট
১২ মার্চ ২০১৯৭,৩০,০০০ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ক্যাম্পের উপর চাপ কমাতে কক্সবাজার থেকে তাদেরকে হাতিয়ার ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার৷ কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে জায়গাটিকে বসবাস অনুপযোগী হিসেবে অভিহিত করে এই পরিকল্পনার সমালোচনা করে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন৷
জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি গেল জানুয়ারিতে দ্বীপটি সফর করেছেন৷ সোমবার এ নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার কাছে নিজের মতামত জানান তিনি৷ বলেন, ‘‘এই সফরের পরও বেশ কিছু বিষয়ে আমি এখনও নিশ্চিত নই, বিশেষ করে দ্বীপটি সত্যিকার অর্থেই বসবাস উপযোগী কিনা৷''
অপরিকল্পিতভাবে এবং শরণার্থীদের মতামত না নিয়ে স্থানান্তর পরিকল্পনা হাতে নেয়ায় নতুন সংকট তৈরি হতে পারে বলেও জানান তিনি৷
তবে বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সাথে সরকার আলোচনা করেছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব শাহ কামাল৷ তিনি বলেন, ‘‘সংস্থাগুলো এই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে৷ স্থানান্তর প্রক্রিয়াসহ অন্য সব বিষয় তাদের সাথে আমরা এখন চূড়ান্ত করছি৷'' আবাসন, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসেবা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাঁধ নির্মাণ, সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারসহ সব ধরণের সুযোগ সুবিধাই সেখানে নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন৷ ‘‘আমরা একটি বাঁধ তৈরি করেছি, কাজেই বন্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই,'' বলেন তিনি৷
তদন্তের জন্য বাংলাদেশে আইসিসি কর্মকর্তারা
সহিংসতা ও মানবিক সাহায্যের অভাবে গেল নভেম্বর থেকে ১০,০০০ নাগরিক মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জেনেভা ফোরামকে জানিয়েছেন লি৷ তিনি মিয়ানমারের নৃশংসতার অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসির কাছে তুলে ধরতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহবান জানান৷
এদিকে, রোহিঙ্গা বিতাড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যায় কিনা প্রাথমিকভাবে তা খতিয়ে দেখতে আইসিসির কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসেছেন বলেও জানিয়েছেন লি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি খুবই আশাবাদী৷ এটি অভূতপূর্ব একটি ঘটনা৷ এটা খুবই ছোট পদক্ষেপ৷ কিন্তু আমার আশা এর মাধ্যমে বিচারের বড় দুয়ার খুলে যাবে৷'' মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়নের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে গত সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক পরীক্ষা শুরু করেন আইসিসির তদন্ত কর্মকর্তারা৷ যদিও মিয়ানমার এখনও এই আদালতের সদস্য নয়৷ সে কারণে মিয়ানমারের বিচার করার অধিকার তাদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মো তুন৷
এফএস/জেডএ (রয়টার্স)