1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লক্ষ হাতির দেশ

মিশায়েল আল্টেনহেনে/এসি১৫ এপ্রিল ২০১৫

লাওস-কে এককালে বলা হতো লক্ষ হাতির দেশ৷ আজ সেখানে হাতির সংখ্যা সাকুল্যে এক হাজার৷ যেখানে গভীর বন ছিল, সেখানে আজ বাঁশবন৷ তবে হাতি সংরক্ষণের চেষ্টা চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1F8bV
Teaser Laos Elefanten ohne Logo
ছবি: Michael Altenhenne

মাদি হাতি ‘মায় খামদি'-র পেটে বাচ্চা এসেছে, যে কোনো সময় জন্ম নিতে পারে৷ কাজেই মায় খামদিকে দিয়ে এখন কোনোমতেই কাজ করানো চলবে না৷ সাধারণত মায় খামদি গভীর জঙ্গলে বড় বড় গাছের গুঁড়ি টেনে থাকে৷ কাঠ পরিবহণ করেই তার মাহুত নিজের জীবিকা অর্জন করে৷ মাহুত লুং সিনোয়ানে বলেন, ‘‘আমি মায় খামদিকে এক মুহূর্ত চোখের আড়াল করি না৷ ওর এখন খুব ভালো পরিচর্যা করা দরকার, সেজন্য আমি ওকে এই সুরক্ষা শিবিরে নিয়ে এসেছি৷ এখানে আমার হাতি আর তার বাচ্চাকে দেখার জন্য একজন ডাক্তার আছেন৷ আমি নিজেই হাতির দেখভালের জন্য মাসে প্রায় দেড়শো ইউরো মতো ভরতুকি পাই৷''

হাতি সংরক্ষণ কেন্দ্র

এক প্রত্যন্ত প্রদেশ সয়াবুরি-র এই ‘হাতি সংরক্ষণ কেন্দ্র' হল লাওসে কাজের হাতিদের বাচ্চা প্রসব করার একমাত্র শিবির৷ বর্তমানে এই সুরক্ষিত এলাকায় আটটি হাতি থাকে৷ বেবি ‘নয়' হাতিটির এখানেই জন্ম, তার বয়স আজ তিন বছর৷

এই হাতিদের কোনো টুরিস্টদের পিঠে নিয়ে জঙ্গল দেখাতে হয় না, বরং এখানে হাতিদের রাখা হয় হাতির মতো, তাদের প্রকৃতি ও স্বভাব অনুযায়ী৷ রোজ বিলের জলে নামাটা তার মধ্যে পড়ে৷ দাতাদের দান-খয়রাত থেকে ‘এলিফ্যান্ট এশিয়া'-র বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকারীরা হাতিদের বিলুপ্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন৷ লাওস-কে এককালে বলা হতো ‘লক্ষ হাতির দেশ'৷ আজ সেখানে বড়জোর এক হাজার হাতির বাস বলে অনুমান করা হয়৷

‘‘হাতিরা আর যথেষ্ট খাবার খুঁজে পায় না, ওরা অনেক সময়েই অপুষ্টিতে ভোগে, দুর্বল হয়ে পড়ে৷ তার পর যদি তাদের ভারি কাজ করতে হয়, তাহলে তাদের জীবনসংশয় হতে পারে – বহু গ্রামে যা হয়েছে৷ বহু জায়গায় বুনো হাতিরাও অনেকদিন আগেই উধাও হয়েছে৷''

নংবুয়া গ্রাম

নংবুয়া গ্রামের আশেপাশেও সেই অবস্থা৷ এটা আসলে দেশের দরিদ্রতম অঞ্চলগুলির মধ্যে পড়ে৷ এককালে এখানে ছিল আদিম বনভূমি; আজ সেখানে কিছু অতিকায় শিকড় পড়ে আছে৷ নব্বইয়ের দশকেই এখানকার অধিকাংশ জঙ্গল কেটে ফেলা হয়েছে৷ আজও লাওসে বেআইনিভাবে গাছ কাটা চলেছে৷ নংবুয়া-র কচিকাঁচারা কোনোদিন হাতি দেখেনি৷ কিন্তু গাঁয়ের মোড়ল কিয় সিঙ্গেয়ন-এর মনে আছে, বুনো হাতিরা কী ভাবে এককালে ধানের ক্ষেতে হানা দিতো৷ হাতিদের বিপদ থাকা সত্ত্বেও, মোড়ল জঙ্গল কেটে ফেলাটাকে একটা বিরাট ভুল বলে মনে করেন৷ সিঙ্গেয়ন বলেন, ‘‘শুধু যে হাতিদের বাসস্থান গেল, এমন নয়৷ আমরা স্থানীয় বাসিন্দারাও আমাদের অস্তিত্বের বুনিয়াদ হারিয়ে ফেললাম৷ আগে আমরা শিকারে যেতাম, জঙ্গলে দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজনীয় জিনিস পেতাম, যেমন জড়িবুটি কিংবা ব্যাঙের ছাতা৷ আমাদের আবার বনভূমিকে ফিরিয়ে আনতে হবে৷''

Teaser Globalideas – Elefanten
নেপালে হাতিছবি: Wolf Gebhardt

বাঁশবন প্রকল্প

এককালে যেখানে আদিম অরণ্য ছিল, আজ সেখানে প্রধানত বাঁশবন৷ গাঁয়ের মানুষদের বাঁশ খুবই কাজে লাগে বটে, কিন্তু তাদের প্রথমে শিখতে হবে, বাঁশ কী ভাবে টেকসইভাবে ব্যবহার করতে হয়৷ লাৎসামি বুফা ভিয়েনতিয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসেছেন৷ তিনি স্থানীয় জনতাকে বাঁশের চাষ ও বাঁশ কাটা সম্পর্কে খোঁজখবর দেন৷ প্রকল্পটি জার্মান সরকারের সাহায্যে চলছে৷

প্রত্যেক বাঁশঝাড় থেকে মাত্র কয়েকটি করে বাঁশ কাটা উচিত, যাতে এই বাঁশবনেরও সেই আদিম অরণ্যের দশা না হয়! বুফা বলেন, ‘‘বাঁশ অনেক উপকার করে: মাটিতে কার্বন ডাইঅক্সাইড ধরে রাখে; মাটির ক্ষয় রোখে; বর্ষার জল ধরে রাখে আর প্রকৃতিদত্ত সার হিসেবে কাজ করে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিপুল – তারা যাতে সেই সম্ভাবনা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে, আমরা তাতে সাহায্য করতে চাই৷''

সাংথং এলাকায় এখন বাঁশ চাষের ধুম পড়েছে! গ্রামবাসীরা শুধু বাড়িতে বা বাড়ির কাজেই নয়, বাঁশের লগা-কঞ্চি দিয়ে আসবাব তৈরি করে তা বিক্রি করে থাকেন৷ ধানচাষের সঙ্গে সেটাও একটা আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানকার মানুষদের৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান