বিনিয়োগ ফোরামের বৈঠক
২৭ জুন ২০১৩বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের যে বিপুল সম্ভাবনা ও সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ভারতের শিল্প ও বণিক মহলে তা তুলে ধরতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পর্ষদের নির্বাহী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সরকারি সংস্থা ছাড়াও ২৫টি নামি-দামি বেসরকারি কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা মুম্বই-এ দু'দিনের এক শীর্ষ আলোচনাচক্রে মিলিত হচ্ছেন৷
বেসরকারি কোম্পানিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হলো, বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার ব্যাংক, ঢাকা কটন কোম্পানি, ইউনিভার্সাল হেলথ সার্ভিসেস অ্যান্ড রিসার্চ, রিলায়েন্স ট্যাভেল, নিতল নিলয় গ্রুপ, আমরা টেক, আয়েষা মেমোরিয়াল হাসপাতাল ইত্যাদি৷ বাংলাদেশের যে ১৩টি ক্ষেত্র ভারতীয় বিনিয়োগের অনুকুল বলে মনে করা হচ্ছে, তার মধ্যে আছে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, অটোমোবাইলস, টেক্সটাইল, কেমিক্যালস, প্লাস্টিক, হাল্কা ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, হাসপাতাল ও মেডিকেল উপকরণ, পর্যটন এবং জেমস ও জুয়েলারি৷
ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কী কী সুবিধা দেবে? প্রথম ধাপে দেবে জমি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস কানেকশন, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, কারখানা শেড, ভিসাসহ দ্রুত নথিপত্র অনুমোদন৷ দ্বিতীয় ধাপে আছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নির্দিষ্ট যৌথ উদ্যোগ স্থাপন৷ যৌথ উদ্যোগে আছে ২৩টি প্রকল্প যার নিট মূল্য সাড়ে ১৮ কোটি মার্কিন ডলার৷ যার মধ্যে মোটর সাইকেল ও টায়ার উৎপাদনে তিন কোটি ডলার, খেলনা তৈরিতে দেড় কোটি ডলার, কৃষি-ভিত্তিক শিল্পে এক কোটি ৬০ লক্ষ ডলার এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় এক কোটি ডলার৷
নির্দিষ্ট কারখানাগুলির মধ্যে আছে, বোন চায়নার বাসনপত্র তৈরি হবে সিলেটে৷ উল্লেখ্য, বোন চায়নার বাসনপত্রের আন্তর্জাতিক বাজার ২০০ কোটি ডলারের৷ ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে যৌথ প্রকল্পে ডেটা সেন্টার বসবে ঢাকায়৷ এছাড়া, ঢাকার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সম্প্রসারণ এবং মেডিক্য়াল, ডেন্টাল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপন৷ আছে ঢাকার অভিজাত এলাকায় বিশ্বমানের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ৷ এজন্য প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত বিনিময়ের দ্বারা নির্দিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দু'পক্ষের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ব্যক্তিরা আলাদা আলাদা বৈঠক করবেন৷
ভারতের কাছে বিনিয়োগের সব থেকে আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল এখন বাংলাদেশ৷ প্রথমত, ভৌগলিক নৈকট্য ছাড়াও বাংলাদেশ প্রতিবেশি বন্ধুদেশ৷ দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ যেসব সুবিধা দিচ্ছে বিদেশি লগ্নিকারীদের তা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশে নেই৷ যেমন ১০০ শতাঁশ ইকুইটি, উৎপাদনী ব্যয় তুলনামূলকভাবে অনেক কম, শুল্কমুক্ত কারখানার যন্ত্রপাতি আমদানি, সব বিদেশি লগ্নি ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট আইনে সুরক্ষিত, লগ্নিকারীরা তাদের লভ্যাংশ নিজ দেশে পাঠাতে পারবে৷ দরকার হলে যে কোনো সময়ে তাদের ব্যাবসাপাতি গুটিয়ে মূলধন স্বদেশে ফেরত নিয়ে যেতে পারবে৷ সর্বোপরি বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ ২৫ বছরের নীচে, অর্থাৎ প্রাণশক্তিতে ভরপূর শ্রমশক্তির এক বিশাল ভাণ্ডার মজুত৷