লতিফ সিদ্দিকীকে অব্যাহতি
১ অক্টোবর ২০১৪বুধবার বিকেলে তিনি টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং কেবিনেট সচিবসহ অনেকেই দেশের বাইরে থাকায় তাঁর অব্যাহতিপত্র এখনো দেয়া হয়নি৷ তবে তাঁকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে৷ বুধবার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতি দেয়া হবে৷''
তিনি জানান, ‘‘লতিফ সিদ্দিকী হজ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তার দায় সরকার বা দল নেয়নি, নিতে পারে না৷ তাই এর দায়দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে৷ তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করেছেন৷''
গত রবিবার যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে হজ এবং তাবলিগ নিয়ে ‘আপত্তিকর' মন্তব্য করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী৷ তবে তিনি তাঁর বক্তব্যে এখনো অটল এবং অবিচল রয়েছেন বলে জানিয়েছেন৷
এদিকে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঢাকা এবং সারাদেশে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর লন্ডন গেছেন৷ সোমবার থেকে তিনি ঢাকায় দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কয়েকদফা কথা বলেছেন বলে জানা গেছে৷ টেলিফোন আলাপে তিনি লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷ জানা গেছে তাঁকে শুধু মন্ত্রিসভা নয়, দল থেকেও বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ এছাড়া নেয়া হতে পারে আইনি ব্যবস্থা৷ বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ শুরু হয়েছে নানা অনিয়মের তদন্ত৷
এদিকে প্রধানমন্ত্রী দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও খবর নিচ্ছেন৷ পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি জাভেদ পাটোয়ারী জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সরাসরি তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন৷ প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে বলেছেন৷'' পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ‘‘তাঁরা সারদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দিয়েছেন যাতে লতিফ সিদ্দিকীর ঘটনায় প্রতিবাদের নামে কেউ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে৷''
এদিকে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের প্রতিবাদ সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ৷ আমরা কোনো ধরণের ভাঙচুর বা নাশকতার ঘটনার মধ্যে যাব না। তবে লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা এবং সংসদ সদস্য পদ থেকে বাদ দিলেই হবে না, তাঁকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷'' তিনি বলেন, ‘‘তাঁকে বাংলাদেশের মাটিতে আর প্রবেশ করতে দেয়া হবে না৷ তিনি যদি বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করেন তাহলে বিমানবন্দরেই তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে৷ নয়তো তৌহিদী জনতা তাঁকে বিমানবন্দর ঘেরাও করে আটক করবে৷''
জানা গেছে, লতিফ সিদ্দিকীর রাজনৈতিক বন্ধুরা তাঁকে দেশে না ফেরার পরামর্শ দিয়েছেন৷ কারণ তাঁরা মনে করেন এমনিতেই তিনি মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন৷ আর দেশে ফিরলে তাঁকে কারাগারেই যেতে হবে৷ মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘‘তিনি দেশে ফিরবেন কি ফিরবেন না, তা তাঁর বিষয়৷ কিন্তু তাঁর সঙ্গে সরকার বা দল নেই৷''