লর্ডসে হেরেও জেদ ছাড়েননি জনসন
২১ অক্টোবর ২০২০ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যখন ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধে ব্যস্ত, তখনই ব্রিটিশ সংসদের উচ্চ কক্ষ বিপুল ভোটে তাঁর বিতর্কিত আইনের খসড়ার বিরুদ্ধে রায় দিলো৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে জনসনের সরকার যে আইনের খসড়া পেশ করেছে, তার তীব্র বিরোধিতা করলেন হাউস অফ লর্ডসের সদস্যরা৷ তবে উচ্চ কক্ষের ক্ষমতা প্রতীকি হওয়ায় আইন কার্যকর হওয়ার পথে কিছুটা বিলম্ব ঘটলেও কোনো বাধা সৃষ্টি করা যাবে না৷ নিম্ন কক্ষ এর আগেই অভ্যন্তরীণ বাজার সংক্রান্ত এই আইনের খসড়া পাস করেছে৷
এদিকে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা বন্ধ থাকায় বোঝাপড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন গত শুক্রবার ইইউ-র মনোভাব সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয় নি৷ সংলাপের পূর্বশত হিসেবে ব্রিটেন আগেই ছাড়ের দাবি করছে৷ জনসনের দাবি, শুধু ব্রিটেন নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও আপোশ করতে হবে৷ এমনটা স্বীকার করলেই তিনি আলোচনার জন্য সবুজ সঙ্কেত দেবেন৷ অন্যদিকে ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট না করে চুক্তির লক্ষ্যে আবার আলোচনা শুরু করার ডাক দিয়েছেন৷ ব্রিটেনের প্রতিনিধি ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর তিনি এই মন্তব্য করেন৷
ইইউ ব্রিটেনের সর্বশেষ দাবি মনে নিতে প্রস্তুত নয়৷ লন্ডনের দাবি মেনে আইনের খসড়া ও সংলাপের কাঠামো নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হলেও ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ ও মাছ ধরার অধিকারের মতো বিষয় উপেক্ষা করছে না ব্রাসেলস৷
১লা জানুয়ারি ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর হবার পর অন্যান্য দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্তরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সুবিধা বার বার তুলে ধরেছে জনসনের সরকার৷ মঙ্গলবার সেই লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফার আনুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়েছে৷ দুই পক্ষই বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদ প্রকাশ করেছে৷ কোনো সময়সীমা স্থির না হলেও ব্রিটেন দ্রুত বোঝাপড়ার আশা করছে৷ মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনায় যোগ দিয়ে বলেন, প্রায় ৩০টি দল লাগাতার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে৷ উল্লেখ্য, খাদ্যপণ্যের মান ও ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামোয় অংশগ্রহণ সম্পর্কে ব্রিটেনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে৷ অন্যদিকে জনসন সরকারের বিতর্কিত আইনের খসড়ার কারণে উত্তর আয়ারল্যান্ডে শান্তি বিপন্ন হলে দলমতনির্বিশেষে ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিরোধিতা জোরালো হয়ে উঠবে বলে আগাম পূর্বাভাষ পাওয়া যাচ্ছে৷
এসবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)
গতবছরের জুলাইয়ের ছবিঘরটি দেখুন...