লাগে মনোবল আর কাজের প্রতি ভালোবাসা : সুপ্রীতি ধর
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১সুপ্রীতি ধর৷ বাংলাদেশের নামী সাংবাদিকদের একজন৷ এই পেশায় সাফল্য তিনি পেয়েছেন বটে, তবে তার পাশাপাশি তাঁর বক্তব্যও খুব স্পষ্ট করে বলেছেন তিনি৷ জানিয়েছেন, কেমন করে তিনি এলেন এই পেশায়৷ প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নে তিনি গিয়েছিলেন অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করতে৷ কিন্তু গিয়ে দেখেন, বিষয়টি বদলে হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতা৷ সেটাকে আর বদলাননি তিনি৷ তাই নিয়ে পড়াশোনা করে দেশে ফেরেন৷ কাজ করতে থাকেন ‘প্রথম আলো' সংবাদপত্রে প্রথমে৷ পরে বিবিসি'তেও৷ এরপর ‘যমুনা টিভি' ঘুরে তিনি বর্তমানে ‘মাছরাঙা' টিভিতে নিউজ এডিটরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন৷ সুপ্রীতি তাঁর পেশাদারী জীবন শুরু করেছিলেন ‘প্রশিকা' নামের একটি এনজিও'তে৷ যদিও সেকাজ তাঁর পছন্দ হয়নি তেমন৷
পরিবারেই সাংবাদিকতার বীজ ছিল৷ পিতা মধুসূদন ধর সংবাদ পাঠানোর কাজ করতেন৷ ৭১-এ পাকবাহিনী সেই কারণেই তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে৷ সুপ্রীতির এক বড়োভাইও সাংবাদিকতার এবং লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত৷ সুপ্রীতি জানিয়েছেন, মেয়েরা এই পেশায় এসে যদি ভালোবেসে কাজটিকে আপন করে নিয়ে করতে পারে, তাহলে অনেক বাধা ঠেলে এগোনো যায়৷ পরবর্তী প্রজন্মের মেয়েদের পরামর্শ দিতে গিয়ে সুপ্রীতি বলছেন, অনেক মেয়েই বলে, রাতের ডিউটি করতে পারব না৷ এই মানসিকতা বদলাতে হবে তাদের সর্বাগ্রে৷ নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে তাঁর মন্তব্য, তিনি একজন একক মাতা৷ দুটি সন্তানকে একাই মানুষ করছেন৷ সমস্যা হয়তো এসেছে অনেক সময়৷ কিন্তু তাতে পিছপাও হননি কখনোই৷
তাই বলে কী মেয়েদের জন্য পেশাগত সমস্যা আসে না সাংবাদিকতায়? সুপ্রীতি দৃঢ়স্বরে জানাচ্ছেন, সমস্যা আসে৷ যেমন, নারী সাংবাদিকদের কেরিয়ারে উত্থানের দিকটি কিছুতেই তত মসৃণ হয়না, যেমনটা একজন পুরুষের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে৷ বাংলাদেশে অনেক মহিলা সাংবাদিকতার পেশায় আছেন৷ কিন্তু, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত জায়গায়, অর্থাৎ, ওপরের পদে ক'জন রয়েছেন? প্রশ্ন তোলেন সুপ্রীতি৷ তাঁর এই নিদর্শন স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়, সমীকরণগুলি সবসময়ে সঠিক নয়৷ মেয়েদের পিছিয়ে রাখার একটা সূক্ষ্ম প্রচেষ্টা রয়েই গেছে৷ আর সে এক অনস্বীকার্য সত্য৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ