লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারত-চীন সংঘাত
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ফের সংঘাতে ভারত এবং চীন। মঙ্গলবার ভারতের বিদেশমন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, লাদাখ সীমান্তে চীন যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কথা বলছে, ভারত তা কখনোই মানে না। বস্তুত, সংবাদপত্রে প্রকাশিত চীনের একটি বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক এই বিবৃতি জারি করেছে বলে জানা গিয়েছে। সাম্প্রতিক লাদাখ সংকটে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারতের এই বিবৃতি নতুন মাত্রা যোগ করল।
লাদাখ এবং অরুণাচল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ভারতের সঙ্গে চীনের সংঘাত চলছে। সম্প্রতি চীনের প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে সেখানকার একটি সংবাদপত্র লিখেছে, ১৯৫৯ সালের চুক্তি অনুযায়ী চীন লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা চিহ্নিত করেছে। এবং সেই অনুযায়ী চীনের সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতের বক্তব্য, ১৯৫৯ সালের চুক্তি ভারত মানে না। ওই সময়েই ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। ভারতের বক্তব্য, ১৯৫৯ সালের চুক্তিতে স্পষ্ট ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা চিহ্নিত করা হয়নি। একটি আভাস দেওয়া হয়েছিল মাত্র। তার ভিত্তিতে বর্তমান সময়ে চীন সীমান্ত চিহ্নিত করতে পারে না। ভারতের দাবি, ১৯৫৯ সালের পরে আরো বহু ঘটনা ঘটে গিয়েছে। ভারত-চীন যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। একাধিক বৈঠক এবং চুক্তি হয়েছে। ফলে এখন ১৯৫৯ সালের চুক্তির কথা বলার কোনো অর্থ হয় না। ভারত ওই চুক্তিকে মানেও না।
২০০৩ সালে ভারত এবং চীনের মধ্যে আরেকটি চুক্তি হয়েছিল। তাতে ঠিক হয়েছিল, দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার একটি স্পষ্ট ধারণা তৈরি করবে। কিন্তু মঙ্গলবারের বিবৃতিতে ভারত জানিয়েছে, চীনের সঙ্গে সে কাজ করাও সম্ভব নয় কারণ, চীন ওই বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহী নয়। নিজেদের অবস্থান থেকে তারা এক চুলও সরতে রাজি নয়। ফলে ভারতও এ বিষয়ে আলোচনা করতে আর আগ্রহী নয়।
সম্প্রতি মস্কোয় ভারতের বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে চীনের বিদেশ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে সাব্যস্ত হয়েছিল, বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পাঁচটি বিষয়ে আলোচনা করা হবে। স্থির হয়েছিল, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দুই দেশই সেনা সরিয়ে নেবে। কিন্তু সেনা স্তরের বৈঠকে সে বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়নি। হয়নি কারণ, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়েই দুই দেশের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। চীন যাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বলে মনে করে, ভারত তা মানে না। ফলে সেনা সরানো যায়নি। সেনা সূত্রের খবর, শীতের কথা মাথায় রেখে কোনও কোনও এলাকায় সেনা সামান্য বাড়ানো হয়েছে। ফলে লাদাখ সংকট এখনই কাটার কোনো সম্ভাবনা বিশেষজ্ঞরা দেখছেন না।
এসজি/জিএইচ (এএনআই)