1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘লাশের মিছিল আর কত দীর্ঘ হলে আমাদের টনক নড়বে?’

২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চকবাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর একই ধরণের ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যুতে ক্ষোভ জানিয়েছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ৷

https://p.dw.com/p/3DlzY
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain

রাফিউজ্জামান সিফাত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘মৃতের সংখ্যা ৭৬, বাড়ার আশংকা, আহত অর্ধশত৷ পুরান ঢাকার এই মানুষগুলো বহু আগে থেকেই মাইনফিল্ডে বাস করে৷ আমরাই বা কতটা নিরাপদ? প্রতিনিয়ত যে গাড়িটাতে চড়ছি, সেটার সিলিন্ডার কতটা নিরাপদ? গ্যাস সিলিন্ডারের এই শহর, কতটা ভয়ঙ্কর মরণফাঁদ নিয়ে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য! নিমতলী থেকে আমরা শিক্ষা নেইনি, কাজেই একের পর এক উচিত শিক্ষা প্রকৃতিই দেবে, এই নিয়ম৷''

সাংবাদিক রাকিবুল হাসান লিখেছেন, ‘‘কোন কিছুরই দায় নেয় না রাষ্ট্র৷ সে কারণেই চকবাজার হয়ে ফিরে আসে নিমতলী৷ রাজপথে সড়ক দুর্ঘটনার লাশের মিছিল কমে না, বিফলে যায় ছাত্র-ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন৷ রানা প্লাজা হয়তো এখন ভিন্ন কোনো নামে ফেরার অপেক্ষায়৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ৪৮ ঘণ্টার আশ্বাস শেষ হয় না ৮ বছরেও৷ তখন মনে পড়ে আরেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনো এক সময়ে বলা ঐতিহাসিক উক্তি, ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে'৷''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক সুদীপ চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘‘একটি অপরিকল্পিত অনিয়ন্ত্রিত শহরের নিষ্ঠুর উদাহরণ ঢাকা! চকবাজার, নিমতলীর এই যে প্রাণেরা, এঁরা আর ফিরবে না, হাসবে না, কাঁদবে না, অভিমান বা ভালোবাসায় মুখর হবে না৷ জীবিত মানুষের কষ্ট সব চোখের জলে দলবেঁধে বাতাসে শুকিয়ে যাবে আর শূন্যে কেবলই হাহাকার ছড়াবে৷'' 

সাংবাদিক মুনমুন শারমিন শামসও নিমতলীর ঘটনার কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘‘আমরা যদি বলি, ঢাকার দিকে নজর দিন, পুরান ঢাকাকে বাঁচান, ঢাকাকে রক্ষা করুন, সাথে সাথে কিছু হীনমন্য আর কিছু সুবিধাবাদী দলবাজ ছুটে আসবে ভুল ধর‍তে৷ নিমতলীর ঘটনার পর আবার এই লাশের সারি, আমাদের কিচ্ছু করার নাই?''

মনিরুজ্জামান ফাহিম লিখেছেন, ‘‘একুশের শোক ছাপিয়ে চকবাজার ট্রাজেডি পুরো জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছে৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কারণ এখন পর্যন্ত ভবনের সব জায়গায় খোঁজা সম্ভব হয়নি৷''

ইসমাইল হোসেইন আজিম লিখেছেন, ‘‘নিমতলী থেকে চকবাজার৷ লাশের মিছিল আর কত দীর্ঘ হলে আমাদের টনক নড়বে? আমাদের জীবনের কি কোনোই মূল্য নেই? কেনো আবাসিক এলাকা থেকে এসব কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি, দাহ্য পদার্থের গুদাম আমরা সরাতে পারিনা? কেন দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের এতগুলো ইউনিট থাকা সত্ত্বেও আগুন নেভাতে এত সময় লাগবে? এত অপরিকল্পিত কেন সব?''

সাংবাদিক ফয়সাল শোভন লিখেছেন, ‘‘শত সংখ্যা আগুনে পোড়ে, হাজারো সংখ্যা ভবনে চাপা পড়ে, লাখো সংখ্যা গায়েবি মামলার খপ্পরে, কোটি সংখ্যা শোষকের জালে, সংখ্যারা উন্নয়নে উপচে পড়ে৷''

কাজী সাবির লিখেছেন, ‘‘চকবাজারের ‘ওয়াহিদ ম্যানশন' ভবনের তৃতীয় তলায় থাকতেন গর্ভবতী নারী রিয়া ও তার স্বামী রিফাত৷ অসুস্থ থাকার কারণে ভবন থেকে নামতে পারেননি রিয়া, তাই নামেননি রিফাতও৷ গর্ভের সন্তানসহ দু'জনেরই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে, করুণ মৃত্যু৷ খুব তাড়াতাড়িই হয়তো, রিয়া-রিফাত তাদের অনাগত সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করবে!''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: জাহিদুল হক