লিবিয়া পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ অস্পষ্ট
১১ এপ্রিল ২০১১গতকাল রোববার থেকে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের ব্যাপক দৌড়ঝাঁপের পরও আজ মিসরাতা শহরে হামলা করেছে গাদ্দাফির অনুগত সেনারা৷ বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাদ্দাফির কামান বাহিনী শহরে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে গোলা বর্ষণ করেছে৷ টিভি চ্যানেল আল জাজিরা বিদ্রোহীদের সূত্রে জানিয়েছে যে, এই হামলায় অন্তত পাঁচ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে৷ এর আগে সপ্তাহান্তেও গাদ্দাফি সেনারা বিদ্রোহীদের ওপর ব্যাপক হামলা চালায়৷ গাদ্দাফির প্রশিক্ষিত সেনা এবং তাদের ভারী অস্ত্রের মুখে ক্রমেই পিছু হটছে বিদ্রোহীরা৷ জাতিসংঘ জানিয়েছে যে গত এক সপ্তাহে মিসরাতা শহরে অন্তত ২০ জন শিশু নিহত হয়েছে গোলাগুলিতে৷
এদিকে সোমবার শুরুর দিকে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আশার কথা শোনা গিয়েছিল৷ প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা সোমবার সকালে জানান যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা যে রোড ম্যাপের প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে সাড়া দিয়েছেন গাদ্দাফি৷ তবে গাদ্দাফির ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি এইউ-র পক্ষ থেকে৷
আর এই জায়গাতে এসেই আটকে গিয়েছে কোন ধরনের সমাধানের সম্ভাবনা৷ গাদ্দাফির সরকারের মুখপাত্র মোনেম আল লামুশি জানিয়েছেন, গাদ্দাফির পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে কোন কিছু করার নেই৷ অন্যদিকে বিদ্রোহীদের প্রধান দাবি, গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরে আসতে হবে৷ বিদ্রোহীদের মুখপাত্র মুস্তাফা গেরিয়ানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, যে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রস্তাবের বিস্তারিত জানার পর তারা এই ব্যাপারে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন৷ তবে গাদ্দাফিকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে৷
উভয় পক্ষের মধ্যে এই অনড় অবস্থানের মধ্যেই আজ আবারও মিসরাতা শহরে শুরু হয়েছে গাদ্দাফি সেনাদের হামলা৷ ন্যাটোর কর্মকর্তারা এখন প্রস্তাবিত শান্তি প্রস্তাবের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ ন্যাটোর মহাসচিব আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন জানিয়েছেন যে গাদ্দাফি যেই শান্তি প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তা অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে৷ একই সঙ্গে তিনি বলেছেন যে লিবিয়ার এই জটিলতা মেটানোর জন্য সামরিক হামলাই একমাত্র পন্থা নয়৷ উল্লেখ্য, গাদ্দাফি সেনাদের হামলা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য ইতিমধ্যে লিবিয়ার বেশিরভাগ এলাকাতে উড়াল নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে ন্যাটো৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন