লিবিয়ায় আবারো সামরিক হস্তক্ষেপ?
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬সিরিয়া এবং ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বায়ু অভিযানে কাজ হয়েছে বৈকি: যে সব আইএস যোদ্ধা সরাসরি নিহত হয়েছে, তাদের বাদ দিলেও, দৃশ্যত বহু আইসিস বা আইসিল যোদ্ধা এখন লিবিয়া কিংবা নাইজেরিয়ায় আশ্রয় বা নতুন কর্মক্ষেত্র খুঁজছে৷
মার্কিন সূত্র বলে, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর তথাকথিত ‘খেলাফতে' যোদ্ধার সংখ্যা আগে ধরা হতো ২০ থেকে ৩৩ হাজার – এখন নাকি সেটা কমে ১৯ থেকে ২৫ হাজারের মধ্যে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু সিরিয়ায় জিহাদিদের সংখ্যা নাকি দু'হাজার থেকে বেড়ে পাঁচ হাজারে দাঁড়িয়েছে৷ আইএস-এর নিয়ন্ত্রিত এলাকা ও প্রভাবের বাড়া-কমা বোঝা যায় এই গ্র্যাফিক থেকে৷
সিরিয়ায় ‘জিহাদি', অর্থাৎ আইএস যোদ্ধা বা জঙ্গি আইএস সমর্থকরা সির্টে শহরটিকে তাদের দখলে এনেছে – সংলগ্ন ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলও তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ কাজেই ওবামা প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ছে যে, লিবিয়ায় আইএস গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হোক৷
১৮ মাস ধরে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে বিমান অভিযান চালানোর পর একটি তৃতীয় দেশে অনুরূপ অভিযান চালু করতে ওয়াশিংটন স্বভাবতই দ্বিধা বোধ করছে৷ কাজেই লিবিয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বারংবার এই কামনা প্রকাশ করছে যে, অন্য কোনো দেশ লিবিয়ায় সামরিক অভিযানে নেতৃত্ব দিক – লিবিয়ার আদত ঔপনিবেশিক শক্তি ইটালি যা করতে রাজি৷ কিন্তু লিবিয়ায় স্থায়িত্ব আনার জন্য সময় ফুরিয়ে আসছে, বলেছে রোম৷
সিরিয়া ও ইরাকের বাইরে লিবিয়াই যে আইএস-এর মূল ‘ফোকাস', মার্কিন প্রশাসন সে' ‘ঝুঁকি' সম্পর্কে গত দেড় বছর ধরে সচেতন, বলেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জশ আর্নেস্ট৷ গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ‘‘একটা ভুয়ো খোলাফতের হাতে তেল বিক্রির কোটি কোটি ডলার'' সংক্রান্ত বিভীষিকার কথা৷
২০১৪ সাল থেকে লিবিয়ায় বস্তুত দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কর্তৃপক্ষ শাসন চালাচ্ছে৷ কাজেই লিবিয়ায় স্থায়িত্ব আনতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার, যার সম্ভাবনা দূরপরাহত৷ ওদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ কার্টার এই বৃহস্পতিবারেই সিরিয়ায় সম্ভাব্য ‘গ্রাউন্ড অপারেশনে' সৌদি অংশগ্রহণের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন ও সেই সঙ্গে বলেছেন যে, লিবিয়ায় মার্কিন ভূমিকার সম্প্রসারণ সম্পর্কে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷
লিবিয়ার দিকে নজর ফেরানো আর একজনকে বিব্রত করতে পারে, তিনি হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নভেম্বর মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন, যিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন লিবিয়ায় হস্তক্ষেপের সপক্ষে যুক্তি রেখেছিলেন৷ ২০১১ সালে হিলারি নাকি সেটাকে ‘স্মার্ট পাওয়ার' হিসেবে অভিহিত করেছিলেন৷
এসি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)