লোকপাল বিল তৈরিতে যৌথ খসড়া কমিটির বৈঠক
১৫ জুন ২০১১দুর্নীতি রোধে কড়া আইন প্রণয়নে ভারতের সংসদে যে লোকপাল বিল আনার কথা, তার বিভিন্ন সংস্থান তৈরিতে সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত যৌথ খসড়া কমিটির বৈঠক আজ আবার শুরু হয়েছে৷এই বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে ঘরে বাইরে চলেছে তুমুল বিতর্ক৷ স্বার্থের সংঘাত দেখা দিচ্ছে রাজনৈতিক শক্তি ও নাগরিক সমাজের মধ্যে৷ নাগরিক সমাজের বক্তব্য শেষ কথা হতে পারেনা এমনটাই বলা হচ্ছে সরকার পক্ষ থেকে৷ সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জায়গা তাঁরা নিতে পারেন না৷
সরকার ও আন্না হাজারের নেতৃত্বাধীন নাগরিক সমাজের মধ্যে মতান্তরের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো, দুর্নীতি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী এবং উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের এই বিলের আওতায় আনতে চাইছে নাগরিক সমাজ৷ আন্না হাজারে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিলের আওতায় এলে সেটা হবে এক দৃষ্টান্ত৷ নাএলেই লোকের মনে সন্দেহের উদ্রেক হবে৷
সরকার পক্ষ তা মানতে রাজি নয়৷ তাদের মতে এতে প্রধানমন্ত্রীর পদকে খাটো করা হবে৷ প্রধানমন্ত্রীকে সবসময় চাপ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কাজ করতে হবে৷ সরকারের প্রশাসনিক কাঠামো হয়ে পড়বে দুর্বল৷ রাজনৈতিক দলগুলির কোন কোন মহল মনে করেন, সেক্ষেত্রে মাঝামাঝি যে সমাধান হতে পারে, তা হলো প্রধানমন্ত্রীকে যদি বিলের আওতায় আনতে হয় তাহলে তাঁর জন্য বিশেষ রক্ষাকবচ থাকা দরকার৷ লোকপাল প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রাথমিক তদন্ত করতে পারবেন, চূড়ান্ত রায় দিতে পারবেন না৷
শুধু তাই নয়, মন্ত্রী, সাংসদও আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের ক্ষমতা থাকা উচিত লোকপালের৷ বর্তমানে কোন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য দরকার প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি এবং সাংসদদের জন্য লোকসভা বা রাজ্যসভার অধ্যক্ষের৷ নাগরিক সমাজের কো-চেয়ারম্যান আইনজীবী শান্তিভূষণ এইসব ইস্যুর সম্ভাব্য সমাধানে সরকারকে প্রথমে তার অবস্থান খোলসা করতে বলেন৷
নাগরিক সমাজের দাবি, যৌথ খসড়া কমিটির বৈঠক সরাসরি টেলিভিশনে দেখানো হোক৷ তাহলে আমজনতা জানতে পারবেন কোন পক্ষ কী বলছেন৷ তাতেও সরকারের আপত্তি৷ সেটা করা হলে বৈঠক নাকি পরিণত হবে সার্কাসে৷ মোটকথা উভয়পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অবিচল থাকায় কার্যত অচলাবস্থা অব্যাহত৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক