লোকপাল বিল নিয়ে সংসদীয় কমিটির সঙ্গে আন্নার বৈঠক
১০ আগস্ট ২০১১সরকারের আমন্ত্রণে আজ নতুনদিল্লিতে লোকপাল বিল নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন সমাজসেবী আন্না হাজারে ও নাগরিক সমাজের অন্যান্য প্রতিনিধিরা৷ বিলের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে নাগরিক সমাজের আপত্তির কথা ফের তুলে ধরা হয়৷
প্রথম আপত্তি, প্রধানমন্ত্রী, উচ্চ আদালতের বিচারপতি ও সাংসদদের বিলের আওতার বাইরে রাখা নিয়ে৷ দুই, লোকপাল সংস্থার সদস্যদের বাছবেন শুধু সরকার নয়, সেই নির্বাচক কমিটিতে থাকবেন বিচারপতি ও অন্যরা৷ তিন, লোকপালের বিরুদ্ধেই যদি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, তাহলে সুপ্রীম কোর্টে অভিযোগ করার অধিকার শুধু সরকারের থাকবেনা, যে কোন লোক তা করতে পারবে৷
আন্নার বক্তব্য, রাজনীতিক ও আমলাদের দুর্নীতি রোধই বিলের লক্ষ্য৷ কিন্তু সরকার বিলের যে খসড়া বানিয়েছে, তাতে লোকপালকে কার্যত কোনো ক্ষমতা দেয়া হয়নি৷ দেশের লোক বুঝতে পেরেছে সরকার দুর্নীতিমুক্ত ভারত চায় না এবং ইচ্ছাও নেই৷ তাই আমজনতার জন্য কিছু করা দরকার৷ সরকার স্রেফ দেখাতে চাইছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা লড়াই করছে৷ এই অর্থহীন বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ১৬ই অগাস্ট থেকে তিনি অনশনে বসবেন৷
আন্নার অনশন মঞ্চের জায়গা নিয়ে এখনো পুলিশ দোটানায়৷ আন্নার আগেকার অনশন মঞ্চ যন্তর মন্তরে পুলিশ অনুমতি দেয়নি৷ বিকল্প জায়গার কথা পুলিশ জানাবে বলেছে দু-এক দিনের মধ্যে৷ আন্নার পক্ষে অরবিন্দ কেজরিয়াল চেয়েছেন যন্তরমন্তরের তিন কিলোমিটারের মধ্যে যে-কোন জায়গা৷ পুলিশ যদি তা না দেয় তাহলে আন্না অনশন করবেন জেলে৷
আন্নার অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহে সরকার লোক লাগিয়েছে যে তথ্য তাঁর অমলিন ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করতে পারে৷ কিন্তু সবাই জানে যে, তাঁর না আছে কোন ব্যঙ্ক ব্যালান্স না আছে কোনো বিষয়সম্পত্তি৷ তিনি থাকেন মন্দিরের একটি ছোট্ট ঘরে৷ একটি থালা বাটি গ্লাস আর একটি বিছানা সম্বল৷ বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ মনে করেন, লোকপাল বিল পাশ করালেই দুর্নীতি দূর হবেনা৷ পাশাপাশি দরকার নির্বাচনি সংস্কার ও প্রশাসনিক সংস্কার৷
প্রধানমন্ত্রীকে বিলের আওতায় না রাখা নিয়ে বিজেপির আপত্তি অগ্রাহ্য করে ৪ঠা অগাস্ট সরকার বিলটি পেশ করে সংসদে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ