শব্দদূষণই কি হার্ট অ্যাটাকের কারণ?
প্লেন বা রাস্তায় গাড়ির অসহনীয় শব্দ যে স্বাস্থ্যের নানা ক্ষতি করে, তা আজ প্রায় সকলেরই জানা৷ এ সবের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ সবচেয়ে মারাত্মক ও দুঃখজনক৷ অথচ এ সংখ্যা দিনদিনই বাড়ছে৷ এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
হার্টবিট অনেক দ্রত হতে থাকে
প্রতিদিনই হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে সারা বিশ্বে৷ নানা কারণের মধ্যে শব্দদূষণও হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ বলে ডাক্তাররা মনে করেন৷ বিশেষ করে বড় গাড়ি বা প্লেনের বিকট শব্দে অনেক সময় মানুষের হার্টবিট অনেক দ্রত হতে থাকে৷ আর তা থেকে অনেক সময় কারো কারো নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়, মাথাও ঘোরে৷ এরপরও অবশ্য মানুষ বোঝে না যে শব্দদূষণই এ সব উপসর্গের প্রধান কারণ৷
মানসিক চাপ থেকে হার্ট অ্যাটাক
জার্মানির গুটেনব্যার্গের স্বাস্থ্যবিষয়ক এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, বাইরের অতিরিক্ত শব্দের কারণে অনেকেই মানসিকভাবে চাপ অনূভব করেন৷ আর এই চাপ থেকে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে৷ জার্মান কার্ডিওলজিস্ট বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ক্রিস্টিয়ান ব্লাউ জানান এ তথ্য৷
লাখো মানুষ হার্ট অ্যাটাকের শিকার
অতিরিক্ত শব্দ, বিশেষ করে প্লেনের শব্দে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়৷ এ তথ্য দেখা গেছে ৩৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সি ১৫,০০০ হাজার নারী-পুরুষ নিয়ে দীর্ঘ পাঁচবছর ধরে করা এক সমীক্ষায়৷ জার্মানিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ মানুষ অতিরিক্ত শব্দ, বিশেষ করে প্লেনের শব্দে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন৷
প্লেনের শব্দ
শব্দদূষণ থেকে জার্মানিতে মানুষের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে অতিরিক্ত শব্দ বা প্লেনের শব্দে যে ঝুঁকি বেশি, তা বেশ স্পষ্টভাবেই লক্ষ্যণীয়, জানান ডা. ব্লাউ৷
এ সব রোগী দুই দলে বিভক্ত
শব্দদূষণের কারণে যে অসুখ হয়, তাকে সাধারণত দু’ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে৷ যেমন একদল মানুষ খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারেন যে শব্দের কারণে তাঁদের হৃদপিণ্ডে সমস্যা হচ্ছে৷ অন্যদিকে আরেকদলের মধ্যে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না, যা পরে হঠাৎ করেই ধরা পড়ে৷
শব্দদূষণে আক্রান্তদের ওষুধ
ডা. ব্লাউ জানান, যাঁদের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে তাঁরা শব্দদূষণে আক্রান্ত, তাঁদের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়৷ এর মধ্যে একটি রক্তে জমাট বাধা বন্ধ করতে এবং অন্যটি হার্টবিট স্থিতিশীল রাখার জন্য৷
ব্লাড প্রেশার মাপা উচিত
হৃদপিণ্ড এবং ব্লাড প্রেশারের মধ্যে রয়েছে ঘনিষ্ট সম্পর্ক৷ তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, যাঁদের বাইরের শব্দে খুব বেশি অসুবিধা হয় তাঁদের নিয়মিত প্রেশার বা রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিত৷ কারণ মানুষের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে কিছুটা হলেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব৷