শরণার্থী: জলবায়ু পরিবর্তন যার অন্যতম কারণ
বিশ্বে দু’ধরনের শরণার্থী রয়েছে৷ ১. জাতিগত সহিংসতা কিংবা রাজনৈতিক আদর্শগত কারণে, ২. জলবায়ুর কারণে সৃষ্ট৷ এই দু’ধরনের শরণার্থীই এখন বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কারণ৷ আর এই দু’টো কারণেই বিদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংলাদেশিরা৷
রোহিঙ্গা শরণার্থী
১৯৯১-৯২ সালে আড়াই লক্ষাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থী সামরিক জান্তার নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়৷ ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও ৭৪ হাজার নতুন রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে৷
জলবায়ু উদ্বাস্তু: প্রতি সাতজনে একজন
বাংলাদেশের জলবায়ু শরণার্থীদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্লাইমেট রিফিউজি’ বা এসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে ৪৫ জনের মধ্যে ১ জন জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে৷ আর বাংলাদেশে সংখ্যাটা হবে প্রতি সাতজনে একজন৷ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আগামীতে বাংলাদেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে৷
জলবায়ু উদ্বাস্তু: প্রতি বছর ২,০০০ মানুষ আসছে ঢাকায়
আগে কেবল দারিদ্র্যের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকায় আসত মানুষ৷ আর এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঢাকায় আশ্রয় নিচ্ছে অনেকে৷ প্রতি বছর নতুন করে দুই হাজার মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঢাকায় ঠাঁই নিচ্ছে৷
আন্তর্জাতিক উদ্বাস্তু সংস্থা আইওএম-এর রিপোর্ট
বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রতি বছর ঢাকার বাইরে থেকে কমপক্ষে ৪ লাখ মানুষ এই শহরে আসছে৷ আর আইওএম বলছে, ঢাকার বস্তিতে যেসব মানুষ থাকে, তার মধ্যে ৭০ ভাগই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘর-বাড়ি হারিয়ে এই শহরে আশ্রয় নিয়েছে৷
ইউরোপে শরণার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে
গত বছরের প্রথম তিন মাসে ইটালিতে গিয়েছিল মাত্র একজন বাংলাদেশি শরণার্থী৷ কিন্তু ২০১৭ সালে সেটা আশ্চর্যজনকভাবে বেড়েছে৷ প্রথম তিন মাসে ইটালিতে বাংলাদেশি শরণার্থী এসেছে ২ হাজার ৮শ’ জন৷ নৌকায় ভূ-মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালিতে পৌঁছেছেন তাঁরা৷
১০ হাজার ডলারের বিনিময়ে
দালালদের ১০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়ে থাকেন এই শরণার্থীরা৷ প্রথমে যান দুবাই বা তুরস্ক, সেখান থেকে লিবিয়া হয়ে ইটালিতে পৌঁছান তাঁরা৷ এই দীর্ঘ ও দুর্গম পথ পাড়ি দিতে তাঁদের অনেকের কয়েক বছর লেগে যায়, প্রাণ হারান কেউ কেউ৷