শরণার্থীদের বিরুদ্ধে নগ্ন নিষ্ঠুরতা
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬পূর্বাঞ্চলের স্যাক্সনি রাজ্যের ক্লাউসনিৎস শহরে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটা বাসকে আসতে দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জনতা৷ প্রায় একশ জন স্থানীয় বাসিন্দা চড়াও হয় শরণার্থীদের ওপর, চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘আমরাই জার্মান নাগরিক', শরণার্থীদের উদ্দেশ্য করে স্লোগান দেয়, ‘বাড়ি ফিরে যাও', ‘বাড়ি যাও'৷
পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ৷ এমনকি ভীতসন্ত্রস্ত এক শরণার্থী শিশুকে টেনে-হিচড়ে বাস থেকে নামিয়েও দেয় এক পুলিশ কর্মকর্তা৷ ‘পরিস্থিতি সামাল দিতেই এমনটা করতে হয়েছিল' – ক্লাউসনিৎস শহরের পুলিশ কর্মকর্তা উভে রাইসমান এ কথা বললেও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায় শরণার্থী-বিরোধী জনতার ঢলের কার্যকলাপ৷ ভিডিওতে খুব স্পষ্টভাবেই ধরা পড়ে পুলিশের অমানবিক আচরণ৷
অন্য ঘটনাটি আরো মর্মান্তিক৷ শনিবার জার্মানির আরেক পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাউটজেনে প্রায় ৩০০ শরণার্থীর এক আশ্রয় শিবিরে আগুন লাগে৷ দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে যুদ্ধের কারণে ভিটেমাটি হারিয়ে জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া শরনার্থীদের শেষ সম্বল৷ তাদের আর্তনাদে দ্রুতই জমা হতে থাকে স্থানীয় মানুষ৷ কিন্তু কোনোরকম সাহায্য করা তো দূরের কথা, বরং আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ে তারা৷
যা হোক, আগুন লাগার পরপরই দমকল বাহিনী ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷ আশ্রয় শিবিরের ছাদটি পুরো পুড়ে গেলেও তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি৷ পুলিশের ধারণা, দাঁড়িয়ে থাকা ঐ ব্যক্তিদের মধ্যেই কেউ হয়ত আগুন লাগিয়েছিল৷
এ দু'টি ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন জার্মানির বিচারমন্ত্রী হাইকো মাস৷ পুলিশের আচরণেরও দ্রুত তদন্তের দাবি করেছেন তিনি৷ কিন্তু ক্রমবর্ধমান শরণার্থী-বিরোধীতা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে জার্মানি? অথচ ইউরোপকে কিন্তু কাঁটাতারের পেছনে দেখনে চাননি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ শরণার্থী প্রশ্নে প্রথম থেকেই আন্তরিক তিনি৷ কিন্তু উদার উদ্বাস্তু নীতিকে কেন্দ্র করে বারে বারেই তাঁকে, তাঁর সরকারকে চাপের মধ্যে পড়তে হয়েছে, হচ্ছে এখনও৷
ডিজি/এসিবি
‘নব্য নাৎসি’ আর পুলিশদের এমন নিষ্ঠুর আচরণ দেখে আপনার অনুভূতি কী? জানান নীচের ঘরে৷