শরদ পাওয়ারের দল ভেঙে ভাইপো অজিত বিজেপি-র সঙ্গে
৩ জুলাই ২০২৩রোববার এনসিপি-র নয়জন বিধায়ককে নিয়ে মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন অজিত পাওয়ার। বাকি নয়জন মন্ত্রী হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, দীর্ঘদিনের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং এনসিপি-র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার। তার দাবি, দলের ৫৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৪০ জনের সমর্থন তার সঙ্গে আছে। অজিতের সঙ্গে ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল্ল প্যাটেল। তাঁকে কিছুদিন আগেই দলের ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট করেছেন শরদ পাওয়ার।
শিবসেনা মতোই
মহারাষ্ট্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ঠিক এইভাবেই শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন অধিকাংশ বিধায়ক। বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি সরকার গঠন করেন। পরে নির্বাচন কমিশন দলের প্রতীক ও নাম শিন্ডেকে দিয়ে দেয়।
একইরকমভাবে অজিত পাওয়ার দাবি করেছেন, দলের ৫৩জন বিধায়কের মধ্যে ৪০ জন তার সঙ্গে আছেন। তিনি দলের প্রতীক ও নাম দাবি করে নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন। শিন্ডের উদাহরণ সামনে থাকায় তার এই দুইটি দাবি নির্বাচন কমিশন মেনে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
অজিত পাওয়ারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই কথাবার্তা চালাচ্ছিল বিজেপি। কিছুদিন আগেই অজিতের দল ভাঙার প্রবল জল্পনা ছিল। তারপর শরদ পাওয়ার ইস্তফা দেয়ার ঘোষণা করেন। দলের নেতাদের অনুরোধে তিনি সিদ্ধান্ত বদল করেন এবং মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে ও প্রফুল্ল প্যাটেলকে কর্যকরী সভাপতি করেন।
শরদ পাওয়ার আগামী বুধবার দলের বৈঠক ডেকেছেন। তার সঙ্গে থাকা নেতারা দাবি করেছেন, বিধায়করা বেশিরভাগ শরদের সঙ্গেই থাকবেন। শরদ সোমবার সাতারা যাওয়ার আগে এনডিটিভি-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার পরিবারের মধ্যে কোনো গোলমাল নেই। পরিবারের ভিতরে তারা রাজনীতি নিয়ে কথা বলেন না। সকলেই নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেন।
পাওয়ার জানিয়েছেন, তিনি কোনো নেতার সঙ্গে যোগায়োগ পর্যন্ত করেননি। তবে অজিত পাওয়ারের সিদ্ধান্ত তিনি মানেন না। তিনি উদ্ধব ঠাকরে ও কংগ্রেসের জোটের সঙ্গেই থাকবেন। আর আইনগত বিষয় নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজ্য সভাপতি জয়ন্তী প্যাটেলই সবকিছু করছেন।
কত বড় ধাক্কা?
কিছুদিন আগেই বিহারে বিরোধীদলগুলি একজোট হয়েছিল। তারপরেই মহারাষ্ট্রে একটি প্রধান বিরোধী দল ভেঙে দিলো বিজেপি। সন্দেহ নেই, এটা শরদ পাওয়ারের কাছে এবং বিরোধীদের কাছে ধাক্কা। মহারাষ্ট্রে তাদের শক্তি কমলো।
কিন্তু এর কতটা প্রভাব আগামী লোকসভা নির্বাচনে পড়বে? লোকমতের প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল চাওকে মরে করেন, ''এর আগে উদ্ধবকে ক্ষমতা থেকে সরানো গেছে ঠিকই, কিন্তু শিবসেনার ভোট তার দিকেই থাকার সম্ভাবনা বেশি। তেমনই শরদ পাওয়ারের ক্ষমতাকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। তিনি মাঠে নামলে অনেককিছুই বদলে যেতে পারে।''
শরদ পাওয়ারের বয়স এখন ৮২ বছর। তার শরীর খুব ভালো নয়। কিন্তু এখনো মহারাষ্ট্র তথা বিরোধী রাজনীতিতে তার বিপুল প্রভাব রয়েছে। তাকে বলা হয় রাজনীতির চাণক্য। ফলে শরদ যদি আবার সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাহলে তাদের দিকে জনসমর্থন থাকবে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা।
তবে মহারাষ্ট্রের ঘটনা থেকে বিরোধীরা চিন্তিত। যেভাবে দল ভাঙছে, সিংহভাগ বিধায়ক দল বদলে বিজেপি-র দিকে চলে যাচ্ছেন, তাতে লোকসভার আগে আরো এরকম ভাঙন হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)