1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ ও পরিবহন

৫ জুলাই ২০১৩

গাড়ি ছাড়া অনেকের কাজ চলে না৷ ট্রামে-বাসে সব জায়গায় পৌঁছানো কঠিন৷ ব্যাটারি চালিত ফোল্ডিং সাইকেল সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে৷

https://p.dw.com/p/18z7O
E-Mountainbike DW/Miriam Klaussner März 2012
E-Bikes Elektrofahrräderছবি: DW

সবাই সাইকেল চালায় বটে, তবে আন্দ্রেয়াস লিটগার সবার চেয়ে একটু এগিয়ে থাকেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এ যেন পর্শে আর ফোর্ড ফিয়েস্তা গাড়ির মধ্যে প্রতিযোগিতা৷ তবে তাজা বাতাস বড়ই মজার৷''

মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই গতি শূন্য থেকে ২৫ কিলোমিটারে পৌঁছে যায়৷ সবাই জানতে চায়, এর রহস্য কী? লিটগার বলেন, অবশ্যই একটা ব্যাটারি রয়েছে৷ বার বার সেটা বাকিদের কাছে স্বীকার করতে হয়৷

সাইকেলে ব্যাটারি রাখার আলাদা জায়গা আছে৷ পিছনের চাকার ইঞ্জিনে গতি আনে সেটি৷ আন্দ্রেয়াস আসলে একটি ইলেকট্রিক সাইকেল চালান, যাকে ই-বাইক-ও বলা হয়৷ বছরখানেক আগেই নিজের গাড়ি বিদায় করেছেন৷ লিটগার বলেন, ‘‘গাড়ি ছেড়ে সাইকেল ধরেছি, কারণ পয়সা বাঁচছে, পরিবেশেরও উপকার হচ্ছে৷ ই-বাইক কিনেছি, কারণ কাস্টমারদের সঙ্গে দেখা করতে আমাকে প্রচুর ঘুরতে হয়৷ ঘেমে-নেয়ে তাদের কাছে তো যাওয়া যায় না! মিটিং-এ শুধু আমার গায়ে দুর্গন্ধ থাকলে চলবে না৷''

E-Bikes Elektrofahrräder
সাইকেল বিশেষজ্ঞ লোটার ক্যোনেকাম্প শহরেও ই-বাইক বাড়ানোর পক্ষেছবি: DW

ই-বাইক-এর দাম পড়েছিল প্রায় ৩,০০০ ইউরো৷ মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই ফোল্ডিং সাইকেলটি গুটিয়ে নেওয়া যায়৷ ফলে সেটি সাথে নিয়ে ট্রামে-বাসেও ওঠা যায়৷ কাস্টমাররা যেখানেই থাকুন না কেন, ট্রামে-বাসে চেপে ও সাইকেল নিয়ে তিনি ঠিক সেখানে পৌঁছে যান৷ দরকার পড়লে গাড়িতেও তোলা যায় এই সাইকেল৷ লিটগার বলেন, ‘‘কাস্টমাররা প্রায়ই অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, এত তাড়াতাড়ি কীভাবে এলেন? গাড়ি পার্ক করতে সময় লাগলো না?''

আনকে উশমঁ-ও গাড়ি ছেড়ে ই-বাইক ধরেছেন৷ তাঁকেও আর পার্কিং-এর জায়গা খুঁজতে হয় না৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দুই সন্তান৷ পেছনে প্রায় ৪০ কিলো ওজনের এই অংশ টানতে হলে ই-বাইক সত্যিই বড় আরামের৷ সাধারণ সাইকেলে বেশ কষ্ট হতো৷ দূরে কোথাও গেলে গাড়ির বদলে এখন ই-বাইকই নেয়া যায়৷''

ইলেকট্রিক শক্তি থাকায় সাইকেলে করে ৩০ কিলোমিটার দূরে যেতেও আনকে-র সমস্যা হয় না৷ বৃষ্টিরও পরোয়া করেন না তিনি৷ একমাত্র সমস্যা – ব্যাটারি৷ ৫০ কিলোমিটার পরেই চার্জ ফুরিয়ে যায়৷ আনকে বলেন, ‘‘মনে হয়, আগামী কয়েক বছরে প্রযুক্তির উন্নতি হবে৷ সাইকেলে চেপে দূরে কোথাও গেলে দ্বিতীয় একটি ব্যাটারি সঙ্গে রাখতে হয়, কারণ একবার চার্জ দিলে চলে না৷''

তা সত্ত্বেও জার্মানির প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ কিন্তু গত বছর ই-বাইক কিনেছেন৷ সবচেয়ে সহজ মডেলের দাম ১,০০০ ইউরো৷ মাউন্টেনবাইক সংস্করণের দাম ৫,০০০ ইউরো৷ তবে প্যাডেল ছাড়া চলে না৷ কারণ প্যাডেলে চাপ পড়লে তবেই ইঞ্জিন চালু হয়৷ সাইকেল বিশেষজ্ঞ লোটার ক্যোনেকাম্প বলেন, ‘‘আসলে অনেক রকমের সিস্টেম রয়েছে৷ প্যাডেলে পা পড়লে কিছু সিস্টেম বুঝতে পারে গতি আসছে৷ যতটা চাপ, ততটাই শক্তি চাই৷ সাইকেলের চেন বা পিছনের চাকায় তখন সেই শক্তি পাঠানো হয়৷''

কিছু ইঞ্জিনের ক্ষমতা প্রায় ৫০০ ওয়াট৷ ফলে প্রায় স্কুটারের মতো দ্রুত চলে সেই ই-বাইক৷ কতটা শক্তি দরকার, তা হ্যান্ডেলে বসানো মিটার ঘুরিয়ে তা স্থির করা যায়৷

তবে ই-বাইকের বেশিরভাগ ক্রেতা কিন্তু শহর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলে থাকেন৷ ক্যোনেকাম্প আরও বলেন, ‘‘গ্রামের দিকে সাইকেলের দোকানগুলিতে বেশ ভালোই বিক্রি হয়৷ শহরে এখনো এর তেমন চল হয় নি৷ আসলে চাই অবকাঠামো, এখন যেটার অভাব রয়েছে৷ সাইকেলের জন্য আলাদা পথ, রাস্তায় বার বার থামা এড়ানো, পার্কিং-এর ব্যবস্থা৷ রাতেও নিরাপদে সাইকেল রাখার জায়গা চাই৷''

গোটা ইউরোপে জার্মানিই ই-বাইকের সবচেয়ে বড় বাজার৷ তারপর নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের স্থান৷ ই-বাইকের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল৷ স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও যথেষ্ট রয়েছে৷ আন্দ্রেয়াস লিটগার বলেন, ‘‘একটা সময় আসবে, যখন লোকে গর্ব করে বলবে, আমার একটা ই-বাইক আছে৷ তখন সেটা সত্যি স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে দাঁড়াবে৷''

এসবি/ডিজি