দেখে নেয়ার হুমকি
২৭ জুন ২০১৪বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপ-নির্বাচন চলাকালে জাল ভোটে বাধা দিলে শামীম ওসমান ওই কর্মকর্তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷ নারায়ণগঞ্জের এএসপি (ট্রাফিক) মো. বশির উদ্দিনের দাবি, ‘‘এই উপ-নির্বাচনে তিনি আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিলেন৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচন চলাকালে বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের কেওডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মদনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জালভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন৷ আবদুস সালাম বিষয়টি শামীম ওসমানকে জানান৷ পরে শামীম ওসমান বশির উদ্দিনকে ছয় বার ফোনও করেন৷''
বশির উদ্দিনের অভিযোগ করেন, ‘‘ফোনে শামীম ওসমান বলেন সালাম চেয়ারম্যান কেন্দ্রে ঢুকবে, যা ইচ্ছে তাই করবে৷ তাঁকে কোনো রকম বাধা দেওয়া যাবে না৷''
বশির উদ্দিনের ভাষ্য, ‘‘শামীম ওসমানের এই কথার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে চাকরি করছি৷ আমার পক্ষে কোনো অনৈতিক কাজ করা সম্ভব নয়৷''' তিনি দাবি করেন, ‘‘তাঁর কথার জবাবে শামীম ওসমান বলেন, বশির উদ্দিন নারায়ণগঞ্জে কীভাবে চাকরি করেন, তা তিনি দেখে নেবেন৷''
উল্লেখ্য, নির্বাচনে শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমান একজন প্রার্থী৷ জানা গেছে, সালাম চেয়ারম্যান শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমানের হয়ে কাজ করছিলেন৷ সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হন৷ তাঁদের আরেক ভাই জাতীয় পার্টির নাসিম ওসমান এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন৷ গত ২৯শে এপ্রিল তিনি মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়৷ শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য৷ এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে শামীম ওসমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি৷
এদিকে এই উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে জাল ভোট, কেন্দ্র দখল এবং পোলিং এজন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরাম৷
তিনি কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট, ১৩ নম্বর নলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ ও মহিলা ভোট কেন্দ্র, মাধবপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাসেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাঁদের এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন৷ তবে সেলিম ওসমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এটা দেখার জন্য নির্বাচন কমিশন আছে৷ তারাই এটা দেখছে৷ আমার জানা মতে, এমন কিছু ঘটার কথা না৷''
রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারোয়ার মোর্শেদ দাবি করেন, ‘‘বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে খোঁজ নিয়েছেন তিনি৷ তবে এসব অভিযোগের সত্যতা মেলেনি৷''
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়৷ মোট চারজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন৷ আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি৷
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৪২ হাজার ৪০৫ জন৷ উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম৷