1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শামীমাকে যুক্তরাজ্যের ফেরত নেয়া উচিত: বাবা

৬ মার্চ ২০১৯

তথাকথিত জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট, আইএস-এ যোগ দেয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমার বাবা বলেছেন, তাঁর সন্তানের নাগরিকত্ব বাতিল করা উচিত নয়৷ তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরত আনা উচিত৷

https://p.dw.com/p/3EWUT
সুনামগঞ্জের বাড়িতে আহমেদ আলীছবি: picture-alliance/AP Photo

তিনি আরও বলেছেন, যদি শামীমা স্বীকার করে যে সে অপরাধ করেছে, তবে দেশে ফিরিয়ে এনে তার যথাযোগ্য শাস্তি হওয়া উচিত৷

শামীমার বাবা আহমেদ আলী মঙ্গলবার  বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে  বসে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷ সেই সময় তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাছে তাঁর মেয়েকে ফিরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার সন্তান যখন সিরিয়া গিয়েছিল, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫, সে ছিল অবুঝ৷ আমি ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে তার নাগরিকত্ব বাতিল করা না হয়৷ সে যদি অপরাধ করে থাকে, তবে তাকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দেয়া হোক৷’’

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ সম্প্রতি শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করেছেন৷ যদিও তিনি বলেছেন, কোনো মানুষকে রাষ্ট্রহীন করার সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন না৷ শামীমার পরিবার তার দ্বৈত নাগরিকত্ব নেই বলে জানিয়েছে৷ বিষয়টি নিয়ে এখন মামলা চলছে৷

Großbritannien Renu Begum hält ein Foto ihrer Schwester Shamima Begum
শামীমা বেগমছবি: Reuters/L. Lean

শামীমার বাবার বয়স ৬০ বছর৷ ১৯৭৫ সালে তিনি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন৷ এরপর ১৯৯০ সালে দেশে ফিরে তিনি আসমা বেগম নামে একজনকে বিয়ে করেন৷ এরপর ঐ দম্পতি ব্রিটেনে ফিরে যান৷ তাঁদের চার কন্যা সন্তান রয়েছে, যার মধ্যে শামীমা সবার ছোট৷

এরপর দেশে ফিরে আবারও বিয়ে করেন আহমেদ আলী৷ দুই মাস আগে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশে গেছেন৷

আলী ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘আইএস-এ যোগ দেয়া শিক্ষার্থীদের রুখতে ব্যর্থ হয়েছে তারা৷ এক মাস আগে, একটি স্কুল ছাত্রী সিরিয়ায় গেছে৷ কিন্তু ব্রিটিশ সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷ প্রতিটি স্কুলে তাদের নজর রাখা কর্তব্য৷ এই শিক্ষার্থীদের কেউই প্রাপ্তবয়স্ক নয়৷ ব্রিটিশ অভিবাসন ব্যবস্থা সব বিষয়ে খোঁজ খবর রাখে, বিশ্বের সবচেয়ে তথ্যবহুল ব্যবস্থা তাদের৷ তাহলে শামীমা অন্যের পাসপোর্ট ব্যবহার করে কীভাবে সিরিয়া পালিয়ে গেলো? এমনকি তার নিজের পাসপোর্টও ছিলো না৷ এসব ব্যাপার ভালো করে তদন্ত করা উচিত৷’’

শামীমার স্বামী ইয়াগো রিডিঝিক চলতি মাসে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শামীমা সিরিয়ায় পৌঁছানোর কয়েকদিনের মধ্যে তার সাথে পরিচয় হয়৷ শামীমাই চেয়েছিলেন তাকে বিয়ে করতে৷’’ ইয়াগো বর্তমানে কুর্দিদের একটি বন্দি শিবিরে আছেন৷ আইএস এর সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখতে চান না বলে জানিয়েছেন তিনি৷

দুই বন্ধুসহ ২০১৫ সালে আইএস-এ যোগ দিতে লন্ডন থেকে সিরিয়া পাড়ি জমান শামীমা বেগম৷ তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর৷ সিরিয়ায় যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করা৷ অনলাইনের মাধ্যমে সিরিয়া ও ইরাকে খেলাফত প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত হয়ে আইএস-এ যোগ দিতে তারা সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন৷

শামীমার বয়স এখন ১৯৷ আছেন সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে৷ সম্প্রতি সাংবাদিকদের কাছে তিনি বাড়ি ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন৷ কিন্তু তার আবেদন ব্রিটেনের মানুষের মনে তেমন কোনো সাড়া ফেলেনি, বরং আইএস-এ যোগ দেয়া ও সে বিষয়ে তার কোনো অনুশোচনা না থাকায় বেশিরভাগ মানুষ শামীমার সমালোচনা করেছেন৷ এমনকি তার পরিবারও তার আচরণে বড়ই মর্মাহত বলে জানিয়েছেন তার বাবা৷ সিরিয়ায় গিয়ে এক ডাচ ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন শামীমা, তাদের একটি নবজাতক পুত্র সন্তান রয়েছে৷

এপিবি/জেডএইচ (এপি)

১৮ ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...