শিশুশিক্ষা আর স্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছে বাংলাদেশে: ব্র্যাক
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১সামগ্রিকভাবে দারিদ্রহার কমেছে৷ লক্ষণীয় ভাবে৷ তার নেপথ্যে রয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগের সাফল্য৷ যদিও সামগ্রিকভাবে শিক্ষা আর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলেও আরও অনেক পথ বাকি৷ আসিফ জানাচ্ছেন, দরিদ্র শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল প্রাইমারি স্কুলে এনরোলমেন্ট বা নাম নথিবদ্ধকরণ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, ১০০ শতাংশ সাফল্য এসেছে৷ তবে আসল সমস্যা হল ড্রপ আউট৷ বা ঝরে পড়া৷ সালেহ তথ্য দিয়ে জানাচ্ছেন, শতকরা হিসেবে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী শিক্ষাগ্রহণের মাঝপথে স্কুল ছেড়ে দেয়৷ তার কারণ হিসেবে, তাঁর ব্যাখ্যা, অর্থনৈতিক৷ শহরভিত্তিক শিশুরা ওই স্কুলের সময়ে কাজ করলে কিছু পয়সা উপার্জন করতে পারে৷ অনেক শিশুই তাই করছে৷
স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের ঝরে পড়ার আরেকটি কারণ হল শিক্ষার মান৷ প্রাইমারি স্কুলগুলিতে শিক্ষকের মান বেশ খারাপ৷ ব্র্যাকের রয়েছে ২৫ হাজার নন ফর্মাল স্কুল৷ যেখানে এই ঝরে পড়া বাচ্চাদের ফিরিয়ে আনা হয় স্কুলে৷ এবং শেখ হাসিনা সরকারের চালু করা ক্লাস ফাইভের পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, শতকরা প্রায় ১০০ ভাগ সাফল্য পাচ্ছে এইসব ফের স্কুলে ফিরে আসা ছেলেমেয়েরা৷
শিক্ষার পাশাপাশি রয়েছে, শিশু স্বাস্থ্যের দিকটিও৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে একটি উদাহরণ তৈরি করতে পেরেছে নবজাতদের মৃত্যুহার কমাতে এবং প্রসূতিদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষায়৷ ব্র্যাকের তরফে আসিফ সালেহ-র দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, এমডিজি ফোর লক্ষ্যমাত্রায় গত ১০ বছরে চোখে পড়ার মত অগ্রগতি হয়েছে৷ ২০০১ সালে প্রতি এক লক্ষ-এর হিসাবে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৩২৪ জন৷ বর্তমানে তা নেমে এসেছে ১৯০-এ৷ আর এমডিজি-র সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা, ২০১৫ সালে এই সংখ্যাটিকে ১৪৪-এ নামানো৷ বর্তমানে কাজ চলছে তা নিয়ে৷
পাশাপাশি আর যে সমস্যা শিশুদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, তা হল অপুষ্টি৷ সালেহ জানাচ্ছেন, ক্রনিক ম্যালনিউট্রিশনের কারণে বুদ্ধিবৃত্তির ক্ষয় যেমন হয়, তেমনি স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়না সেইসব শিশুদের বাকি জীবনেও৷ ব্র্যাকের তরফে দেশজুড়ে তাদের যে ৮০ হাজার স্বাস্থ্যসেবিকা রয়েছেন, তাঁদের মাধ্যমে চলছে প্রচারণা৷ যাতে শিশুদের অপুষ্টি ঘোচাতে সচেতনতাটা প্রথমে তৈরি হয়৷
বলিষ্ঠ পরবর্তী প্রজন্ম নির্মাণে এই সচেতনতার পদক্ষেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ আজকে যা সচেতনতা, আগামীকাল সেটাই হয়ে ওঠে বাস্তব আর ভবিষ্যতের উন্নয়ন৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন