বুদ্ধিজীবী দিবস
১৪ ডিসেম্বর ২০১২শহিদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান, বর্তমানে দৈনিক প্রথম আলো-র উপ-ফিচার সম্পাদক জাহিদ রেজা নূর তখন খুব ছোট৷ ভাইদের কেউই কৈশোর পেরোননি৷ স্বচ্ছল পরিবারে তখনই নেমে আসে বিপর্যয়৷ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং রাজাকাররা জাহিদের বাবা সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে৷ তখনকার পাকিস্তান সরকার বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার যে হীন চক্রান্ত করেছিল তার শিকার নাসিম, শাহীন, জাহিদ, শাহিদ ও তৌহিদকে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে বড় হতে হয়েছে৷ সেটা সম্ভব হয়েছে মা নূরজাহান সিরাজীর কারণে৷ নাসিম রেজা নূর ও শাহিদ রেজা নূর প্রকৌশলী, শাহীন রেজা নূর ও জাহিদ রেজা নূর সাংবাদিক এবং তৌহিদ রেজা নূর গবেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও পিতৃস্নেহ না পাওয়া, বাবার অভিভাবকত্ব থেকে বঞ্চিত হবার কষ্ট তাঁদের বুকে বাজে সবসময়৷
দেশের অধিকাংশ মানুষের মতো আরেকটা কষ্টও আছে৷ বাবা যেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন তেমন তো এখনো হয়নি! না, এ ক্ষেত্রে ‘নেই, নেই' করে তালিকাটাকে খুব দীর্ঘ করেননি জাহিদ৷ সিরাজুদ্দীন হোসেন তো স্বাধিকার পাওয়া বাঙালিদের ভূখণ্ডে গণতন্ত্র চেয়েছিলেন৷ বাংলাদেশে পৃথিবীর বুকে দৃষ্টান্ত হবার মতো গণতন্ত্র এখনো এলো কই!
দেশের কোনো প্রাপ্তিতে রাজনীতিবিদদের কৃতিত্ব না দিলেও, অপ্রাপ্তি আর ব্যর্থতার পুরো ভার তাঁদের কাঁধে রাখার একটা চল আছে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল প্রায় সব দেশেই৷ বাংলাদেশে চায়ের আড্ডা, ঘরোয়া আলোচনা থেকে হাল আমলের টক শো-তেও অনেক সময় জাতিকে নিরপেক্ষভাবে দিকনির্দেশনা না দেয়ার জন্য বু্দ্ধিজীবীদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করান কেউ কেউ৷ এ যুগের বু্দ্ধিজীবীরা কি ক্রমশ সমাজের মূল স্রোতের বাইরে চলে যাচ্ছেন? জাহিদ রেজা নূর পরিবর্তন যে এসেছে তা অস্বীকার করেননি, তবে তাঁর মতে, পরিবর্তন এসেছে সবার মাঝেই৷ সময়ের পরিবর্তনটা খুব ভালোভাবেই ফুটে উঠেছে তাঁর কথায়৷