‘শেষ পর্যন্ত আর্থিক সংস্কারে রাজি হন সোনিয়া গান্ধী’
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২আর্থিক প্রবৃদ্ধিতে ভাটা, বৃষ্টিপাতে ঘাটতি এবং একাধিক দুর্নীতিতে মনমোহন সিং সরকার যখন জেরবার, তখন দলের মনোবল বাড়াতে আসরে নামলেন জোট-সরকারের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী৷ ঘুরে দাঁড়িয়ে পাল্টা মার দিতে বললেন বিরোধীপক্ষকে৷ যদিও সোনিয়া গান্ধীর সরকারি ক্ষমতা নেই, কিন্তু কংগ্রেস সভানেত্রী এবং গান্ধী পরিবারের মশাল বাহক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ নীতির ক্ষেত্রে তাঁর মতই শেষ কথা৷ শুরুতে আর্থিক সংস্কারে তাঁর মত ছিল না৷ তাঁর কাছে আর্থিক সংস্কারের আগে সামাজিক কল্যাণ৷
বৃহস্পতিবার জোট-সরকারের সমন্বয় কমিটির বৈঠকে হালের আর্থিক সংস্কারে শরিক দলগুলির একটা চাপা অসন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে৷ বিশেষ করে ডিএমকে এবং এনসিপি'র৷ তারা চান ডিজেলের দাম কিছুটা কম করা হোক এবং ভরতুকি দামে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার পরিবার পিছু ৬টার বদলে ১২টা করা হোক৷ শেষ পর্যন্ত শরিক দলগুলি নিমরাজি হয় তা মেনে নিতে৷ কারণ ঐ একটা - ভোট ব্যাংক৷
সোনিয়ার অন্দরমহলের ডজন খানেক নেতাব্যক্তি এবং কর্মকর্তারা সোনিয়া গান্ধীকে বোঝাতে থাকেন, সংস্কারের পথে না গেলে ১৯৯১ সালে ভারতের যখন দেউলিয়া অবস্থা হয়েছিল, সেই রকম পরিস্থিতি আবারও হতে পারে৷ ভালো অর্থনীতির অপর নাম ভালো রাজনীতি৷ এই নিয়ে বারংবার আলোচনায় বসেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং হার্ভাড-প্রশিক্ষিত নতুন অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম৷
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি, রান্নার গ্যাসে ভরতুকি তুলে নেয়া, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে গরিব মানুষদের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব হবে, তার অভিঘাত পড়তে পারে দলের ওপর ২০১৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে৷ দলের ভবিষ্যত চিন্তা করে গোড়ার দিকে সংস্কারে দ্বিধা ছিল সোনিয়া গান্ধীর৷
সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় একসময় সোনিয়া গান্ধীকে বুঝিয়ে ছিলেন, আমূল সংস্কারে দলের ভোট ব্যাংকে টান পড়তে পারে৷ তাই সামাজিক কল্যাণ আগে৷ এবার প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী ব্যাখ্যা করলেন, সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচির জন্য দরকার বিপুল অর্থ৷ বিদেশি বিনিয়োগ এলে কল্যাণ প্রকল্পের জন্য অর্থেরও অভাব হবেনা৷ আর তার ডিভিডেন্ট দল পাবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে, এমনটাই আশা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ