1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন বছরে সবার প্রত্যাশা রাজনৈতিক সহনশীলতা

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩১ ডিসেম্বর ২০২২

এক বছর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ স্বভাবতই এই বছরটায় রাজনীতির মাঠ গরম থাকবে৷ তাই নতুন বছরে সবাই চান সংঘাতের বদলে রাজনৈতিক সহনশীলতা৷

https://p.dw.com/p/4LbDy
‘রাজনীতিতে যেন সহিংসতা না বাড়ে’ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজনীতি নিয়ে আমার প্রত্যাশা, স্থিতিশীলতা থাকুক, সহনশীলতা থাকুক৷ আগে আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতাম তখন দুই দিন পরপর হরতাল হতো, এতে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হতো৷ এখন অনেকদিন হরতাল নেই৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতা নেই, পড়াশোনার পরিবেশ আছে৷ বাংলাদেশের মানুষতো সংঘাত দেখে অভ্যস্ত৷ ফলে সেই সংঘাতটা আর না থাকুক সেটাই তো আমার চাওয়া হবে৷ শিক্ষক হিসেবে আমার আরেকটি চাওয়া, নতুন বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হচ্ছে, নতুন কারিকুলাম চালু হচ্ছে, এটা যেন সফল হয়৷ আমি যেন দেখি শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করছে৷''

শিক্ষার্থীরা যাতে আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করে: ড. জাফর ইকবাল

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও চান রাজনীতিতে যেন সহিংসতা না বাড়ে৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলছিলেন, ‘‘রাজনীতির ক্ষেত্রে যেন সহনশীলতা দেখা দেয়৷ রাজনীতি হল সবচেয়ে বড় ব্যাপার৷ সেখানে যদি সহনশীলতা দেখা দেয় সেটা আমাদের জন্য সুখকর হবে৷ এই সহনশীলতা সৃষ্টির জন্য উদ্যোগটা কিন্তু সরকারকেই নিতে হবে৷ সরকারের পক্ষ থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে যাতে সহনশীলতা বাড়ে৷ যাতে সবার বক্তব্য উপস্থাপন করার সুযোগ ঘটে৷ যেসব রাজনৈতিক দল আছে তারা যেন প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারে এবং তাদের যেন সেই সুযোগ থাকে৷''

সেন্টার ফর পলিসি ডাইলগের সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০২২ সালে তো অর্থনীতির অনেকগুলো ঝুঁকি গেলো৷ সেই ঝুঁকি ২০২৩ সালেও থাকবে৷ মূল্যস্ফীতি হোক আর রফতানি হোক সব ক্ষেত্রেই এই ঝুঁকি থাকবে৷ অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ালে পারলে এগুলো থেকে বের হওয়া সম্ভব৷ সব ঝুঁকি তো আমাদের নিজেদের উপর নির্ভর করে না৷ আন্তর্জাতিক সুযোগগুলো আমরা যদি নিতে পারি তাহলে অনেক ঝুঁকি কাটিয়ে উঠা সম্ভব৷ সুশাসনের সঙ্গে আমরা যদি কাজ করতে পারি তাহলে পরীক্ষাগুলোতে পাশ করা কঠিন হবে না৷''

অন্যদিকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, নতুন বছরে যেনো জিনিসপত্রের দাম তাদের নাগালের মধ্যে থাকে৷ শ্যাওড়াপাড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম৷ নতুন বছরের প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন,‘‘জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে৷ আমি চাই নতুন বছরে জিনিসপত্রের দাম যেন কমে৷ আমি যে মাছ বিক্রি করি ৪০০-৫০০ টাকার নীচে কোন মাছ নেই৷ তাহলে গরীব মানুষ বাঁচবে কীভাবে? গত এক বছরের মধ্যে সব জিনিসের দাম দ্বিগুণ হয়েছে৷ বাড়িভাড়া বেড়েছে৷ আমি যে ঘরে পরিবার নিয়ে আগে ৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতাম, এখন সেই ঘরের ভাড়া হয়েছে ১০ হাজার টাকা৷ খরচ তো বেড়েছে, আয় তো বাড়ছে না৷ আমাদের চলা কঠিন হওয় যাচ্ছে৷''

সক্ষমতা, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়াতে হবে: মোস্তাফিজুর রহমান

মোহাম্মদপুরের পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বছরে একটা ইনক্রিমেন্ট ছাড়া বেতন বাড়ছে না৷ অথচ দ্রব্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে সেটা আমাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ আমি ৬০ হাজার টাকা বেতন পেয়েও তিনজনের সংসার চালাতে পারছি না৷ গ্রামে বাবা-মাকে আগে মাসে চলার জন্য ৭ হাজার টাকা দিতাম৷ এখন ১০ হাজার টাকায় তাদেরও চলে না৷ সাধারণ মানুষের পক্ষে জীবন চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷ আমার প্রত্যাশা, নতুন বছরে অন্তত দ্রব্যমূল্যটা যেন কমে৷ সাধারণ মানুষ খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারে৷''

কারওয়ান বাজারের চা বিক্রতা আবেদুর রহমান বেশ রাজনীতি সচেতন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রথম চাওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধটা যেন বন্ধ হয়৷ এই যুদ্ধটা অনেক ক্ষতি করে দিছে৷ আমাদের যে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তার জন্য এই যুদ্ধ দায়ী৷ আর রাজনীতি নিয়ে আমার প্রত্যাশা, এক বছর পর তো নির্বাচন, ফলে এই এক বছর রাজনীতির মাঠ বেশ গরম থাকবে৷ তা থাকুক, কিন্তু রাজনীতির নামে মারামারি, খুনাখুনি যেন না হয়, শান্তিপূর্ণ ভোট হোক, যে দল ভোটে জিতবে তারা ক্ষমতায় আসুক৷ কিন্তু গাড়িতে আগুন দেওয়া, ভাঙচুর করা এমন কিছু যেন না ঘটে৷''