সংবাদভাষ্য: দাম্ভিকতার মূল্য দিচ্ছে জার্মানি
২১ ডিসেম্বর ২০২০গত বসন্তে দক্ষিণ কোরিয়ায় যখন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয় তখন জার্মানিতেবিজ্ঞানীরা মুখ ও নাক ঢাকা মাস্ক পরার প্রয়োজন আছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক করে গেছেন৷ যে দেশ করোনা মোকাবিলায় সফল তার প্রতি বিশ্বের এই অংশের সুস্পষ্ট দাম্ভিক আচরণ আমি সহ্য করতে পারি না৷
এমন মনোভাবের কারণে ২০২০ সালে জার্মান অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সাড়ে পাঁচ শতাংশ কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবৃদ্ধি কমবে মাত্র এক শতাংশ৷
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেবে ৫২ মিলিয়ন জনসংখ্যার দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ৫০ হাজার জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ মারা গেছেন ৬৯৮ জন৷ আর প্রায় ৮৩ মিলিয়নের জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় মিলিয়নের বেশি৷ মারা গেছেন ২৬ হাজার ৪০০ জন৷
দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর দেখিয়েছে করোনা মোকাবিলায় ডিজিটালাইজেশন জীবন বাঁচাতে পারে৷ জার্মানি এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে৷
সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের প্রতিদিন সরকারি অ্যাপে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয়৷ আর জার্মানিতে এমনকি জনস্বাস্থ্য বিভাগেরও সরকারের অ্যাপে প্রবেশাধিকার নেই, বলে জানিয়েছেন জার্মান এসোসিয়েশন অফ ডক্টরস ইন দ্যা পাবলিক হেলথ সার্ভিসের প্রধান উটে টাইশার্ট৷
এছাড়া এখনও জার্মানির অনেক জায়গায় করোনা পরীক্ষার ফলাফল ফ্যাক্সের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক দপ্তর এখনও অ্যানালগ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে৷
জার্মাননাগরিকরা প্রতিদিন ফেসবুক, অ্যামাজন, ইন্সটাগ্রাম ও টুইটারে নিজেদের তথ্য দিলেও সরকারের করোনা অ্যাপে তথ্য দেয়ার সময় ডেটা প্রোটেকশনের বিতর্ক তোলেন৷ ফলে এই অ্যাপ খুব একটা কার্যকর হতে পারছেনা৷ এধরনের ‘ডিজিটাল ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' সহ্য করা যায় না৷ লকডাউনের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা ধ্বংসের সময় আমি ডেটা প্রোটেকশন নিয়ে বিতর্ক চাই না৷
আমার কাছে করোনার এই সময়ে ডেটা প্রোটেকশনের চেয়ে জীবনের নিরাপত্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷
আস্ট্রিড প্রাঙে/জেডএইচ