সংলাপের আশা নেই
৪ নভেম্বর ২০১৩প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে টেলিফোনে হরতাল প্রত্যাহার করে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন গত ২৬শে অক্টোবর৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দিষ্ট করা সময়ে সংলাপে না গিয়ে বিরোধী দল ২৭শে অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের হরতাল পালন করে৷ সেই হরতালের পর সংলাপের আশা করা হলেও, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি৷ বরং দুই নেত্রীর ফোনালাপ এবং তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ নিয়ে বিতর্ক করেই সময় কেটে গেছে৷ যার অনিবার্য পরিণতি আবারো তিন দিনের হরতাল৷
সোমবার হরতাল শুরুর আগেই রবিবার রাতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে৷ গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ছোড়া হয়েছে ককটেল বোমা৷ বিআরটিসি-র দোতলা বাসসহ অন্তত ১০টি যানবাহনে আগুন ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে৷ এদিকে এই হরতালের কারণে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে৷ সোমবার এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল৷ এতে প্রায় ২০ লাখ পরীক্ষার্থী বিপাকে পড়েছে৷
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, এবার হরতাল প্রত্যাহার না করলে সরকার আর বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে না৷ তিনি বলেন, হরতাল আর সংলাপ একসঙ্গে হয় না৷ তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো হরতাল প্রত্যাহার করে বিরোধী দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন৷
তবে এর জবাবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার সংলাপের নামে নাটক করছে৷ তিনি বলেন, সরকার আসলে সংলাপের নামে কৌশল করছে৷ তারা আলোচনার নামে সময় ক্ষেপণ করে একতরফা নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে৷ সরকারের এই নীলনক্সা প্রতিহত করতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই৷ তাঁর কথায়, সরকার যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের প্রস্তাব মেনে নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চায় তাহলে বিরোধী দল আলোচনায় বসবে৷ নয়ত আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করা হবে৷
সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকার ও বিরোধী দল এখন কার্যত যুদ্ধে নেমেছে৷ তাই সংলাপের আর কোনো সম্ভাবনা তিনি আপাতত দেখছেন না৷ সরকারি দল যেমন তাদের অধীনে নির্বাচনের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে, বিরোধী দলও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য মাঠে নেমেছে৷ তাঁর মতে, আলোচনা বাদ দিয়ে মাঠে সমাধান চাইলে তাতে সংঘাত-রক্তপাত অনিবার্য৷