সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে ইরান-তালেবান সমঝোতা?
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩গত ১৫ সেপ্টেম্বর ইরানের সংবাদ সংস্থা তাসনিম সে দেশের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এসমাইল খাতিবের একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে৷ সেখানে এসমাইল খাতিব বলেন, ‘‘ ইরান ও তালেবান সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করছে৷'' ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ডের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সংবাদ সংস্থাটিকে তিনি আরো বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) -কে সিরিয়া থেকে তাড়িয়ে দেয়ায় তারা আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ঘাঁটি গেড়েছে,‘‘সেখানে এমন পাহাড়ি এলাকায় তারা (আইএস) অবস্থান নিয়েছে, যেখানে তালেবান সরকার যেতেই পারে না৷ সেখান থেকে তারা তালেবান সদস্যদের ওপর হামলা চালাচ্ছে৷ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা এখন তালেবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি৷''
ইরান অবশ্য নিজেদের ভূখণ্ডের সন্ত্রাসী হামলা নিয়েও উদ্বিগ্ন৷ এক বছরেরও কম সময়ে দক্ষিণাঞ্চলের সিরাজ শহরে শিয়াদের এক মাজারে দু-দুবার হামলা হয়েছে৷ গত আগস্টে এক বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নিহত এবং কমপক্ষে আটজন আহত হয়৷ তার আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে একই স্থানে ভয়াবহ এক হামলায় ১৩ জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছিলেন৷
আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সক্রিয়তা
ইরানের ৯৫০ কিলোমিটার (৫৯০ মাইল)-এর মতো এলাকা আফগান সীমান্ত সংলগ্ন৷ দুর্গম পাহাড়বেষ্টিত সেই এলাকায় এককভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জন্যই প্রায় অসম্ভব৷ এ কারণে সন্ত্রাস দমনের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন
নিরাপত্তা বিশ্লেষক নিসার আহমাদ সিরাজী৷ তবে তিনি মনে করেন, শুধু আইএস-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আফগানিস্তান এবং আফগানিস্তান সংলগ্ন দেশগুলোতে সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ করা যাবে না, কারণ, ‘‘শুধু আইএস নয়, আফগানিস্তানে এখন অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোও সক্রিয়৷ সেগুলোও আফগানিস্তান এবং আফগানিস্তানের পাশের সব দেশ এবং অঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে৷''
তালেবান সরকারকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি ইরান৷ তবে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে৷
অতীতে সন্ত্রাসী হামলা রোধে তার সুফলও পেয়েছে ইরান৷ সে কথা এখনো স্মরণ করেন ইরানের সংসদ সদস্য মাহমুদ নাবাভিয়ান,
‘‘তালেবানের সহায়তায় অতীতে আমরা পবিত্র নগরী মাশাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করেছি৷''
শবনম ফন হাইন/ এসিবি