সন্দেশখালি: এবার বেড়মজুরেও বিক্ষোভেরও আগুন
সন্দেশখালিতে মেয়েদের বিক্ষোভ নতুন নতুন জায়গায় ছড়াচ্ছে। শুক্রবার বেড়মজুরে ভেড়ির আলাঘরে আগুন দেয়া হয়।
কেন ভেড়ির আলাঘরে আগুন?
বেড়মজুরের কাছারিবাড়ি এলাকায় মাছের ভেড়িটি শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ দুই তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি ও তোয়াব মোল্লার। এলাকার মানুষের অভিযোগ, স্থানীয় মানুষের জমি জবরদখল করে এই ভেড়ি বানানো হয়েছে। যাদের জমি নেয়া হয়েছে, তাদের একটা পয়সাও দেয়া হয়নি। শেখ শাহজাহান এখনো ফেরার। তার দুই ঘনিষ্ঠ উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরা গ্রেপ্তার। এই অবস্থায় নারীদের বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখছে সন্দেশখালির একের পর এক এলাকা।
বিঘের পর বিঘে জমি
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বিঘের পর বিঘে জমি জোর করে নিয়ে নেয়া হয়েছে। তারপর সেই জমিতে নোনাজল ঢুকিয়ে শুরু করা হয়েছে মাছচাষ। প্রতিবাদ করলে বা টাকা চাইতে গেলে মারধর করা হয়েছে। শেষ শাহজাহান ও তার সঙ্গীদের বাইক বাহিনী এলাকা শাসন করেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনার কেউ ছিল না।
বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে
গ্রামের নারীদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায়। তারপর তা ধুপখালিতে ছড়ায়। শুক্রবার বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বেড়মজুর। প্রতিটি জায়গাতেই বিক্ষোভের নেতৃত্বে মেয়েরা। তারা অনেকে মুখ ঢেকে কথা বলছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তাদের ভয়, মুখ দেখালে তারা হয়রানির শিকার হবেন।
বেড়মজুরেও মেয়েদের বিক্ষোভ
শুধু ভেডি়তে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়াই নয়, বেড়মজুরে বিক্ষোভ সমাবেশও করেন মেয়েরা। সেখানে তারা বলেন, দখল হওয়া সব জমি ফেরত দিতে হবে। শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করতে হবে। বিক্ষোভকারীরা অজিত মাইতির বাড়িও ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ।
ঘটনাস্থলে এডিজি
দক্ষিণবঙ্গে পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি সুপ্রতিম সরকার ঘটনাস্থলে যান। বিক্ষোভকারীদের তিনি বলেন, ''প্রশাসনের শিবির বসেছে। জেলাশাসকও সেখানে আছেন। কোনো অভিযোগ থাকলে সেখানে জানান। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। সবাই জমি ফেরত পাবেন। তবে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে জমি ফেরতের প্রক্রিয়ায় দেরি হবে।''
বিক্ষোভ থামেনি
পুলিশ-কর্তার প্রতিশ্রুতির পরেও বিক্ষোভ দেখান নারীরা। তারা দাবি করতে থাকেন, শেখ শাহজাহানসহ সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তাদের প্রশ্ন, এখনো পর্যন্ত কেন শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না?
১৪৪ ধারা জারি
এই বিক্ষোভ ও আগুনের পর বেড়মজুরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ছয়জনের প্রতিনিধিদল শুক্রবার সন্দেশখালিতে যান। তারা সেখানে সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা করেন। উপরের ছবিটি বেড়মজুরে ভেড়ির আলাঘর পোড়ানোর।
বিজেপি-র পরিকল্পনা
বিজেপি এবার সন্দেশখালি নিয়ে কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। আগামী ২৭ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি এই বিক্ষোভ হবে। সেখানে সন্দেশখালির নির্যাতিতা নারীদেরও আনার চেষ্টা করা হবে বলে বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন।
‘পুলিশের কোলে শাহজাহান দোলে’
কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর প্রশ্ন, ''শাহজাহানকে কে গ্রেপ্তার করবে? পুলিশের কোলে শাহজাহান দোলে।'' অধীরের অভিযোগ, ''এখানে ক্ষমতার খেলা চলছে। পুলিশ, অপরাধী, তৃণমূল মিলেমিশে গরিব মানুষের উপর অত্যাচার করছে।''