অপরাধী গ্রেপ্তার হচ্ছে না কেন?
২০ এপ্রিল ২০১৬গত ২০শে মার্চ রাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলকায় তনুর লাশ পাওয়া যায়৷ তনুর লাশ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতরের জঙ্গলে পাওয়া গেলেও, সেখানে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়নি৷ প্রথমে লাশ কুমিল্লা সিএমএইচ-এ নেয়া হয়, তারপর লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়৷ প্রথম দফা ময়নাতদন্তে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না হওয়ায়, লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়৷ দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো দেয়া হয়নি৷ আর প্রথম দফায় তো হত্যাকাণ্ডের কারণই নির্ধারণ করা যায়নি৷
সিআইডি মামলার তদন্তে এ পর্যন্ত কয়েকজন সেনা সদস্য এবং এক সেনা কর্মকর্তার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ময়নাতন্তকারী চিকিৎসকদের৷ এছাড়া তনুর বাবাসহ পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷
একমাসের মাথায় তদন্তকারী সংস্থা কুমিল্লা সিআইডি-র বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম জানান, ‘‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, তনুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়৷ এই হত্যাকাণ্ডে অন্তত তিন-চারজন অংশ নিয়েছিল৷'' তবে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হননি সিআইডি-র এই কর্মকর্তা৷
বলা বাহুল্য, তনুর বাবা ইয়ার হোসেন এই তদন্ত নিয়ে চরম হতাশ৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ধর্ষিত তনুর লাশ পাওয়া গেছে ক্যান্টনমেন্টর ভিতরে৷ যা ঘটেছে ওখানেই ঘটেছে৷ আমি আমার সন্দেহের কথা সুনির্দিষ্টভাবে সিাআইডি-কে জানিয়েছি৷ অথচ তারপরও কেন অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে না, তা আল্লাহ-ই জানেন৷''
ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে গরিবের কোনো বিচার নাই৷ ময়নাতদন্ত রিপোর্টের খবর নাই৷ একমাস হয়ে গেল আসামি গ্রেপ্তারের খবরও নাই৷ এখন আমি আর কী করতে পারি? বিচার তাই আল্লাহ-র হাতে ছেড়ে দিয়েছি৷''
তনুর বাবা আরও বলেন, ‘‘আমি জানি না বিচার পাব কিনা৷ আপনারাই বা লিখে কী করবেন!''
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেটে সিভিল চাকরি করেন৷ ঘটনার রাতে তনু তাঁদের ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেই আরেকটি বাসায় ছাত্র পড়াতে গিয়েছিলেন৷ সেই রাতেই ক্যান্টমনেন্টের ভিতরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়৷
তনু হত্যাকাণ্ডের পর বিচারের দাবিতে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হলেও, এখন আর কিছু নেই বললেই চলে৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবহারকারীদেরও তনু হত্যার বিচার দাবিতে এখন আর তেমন সক্রিয় দেখা যায় না৷ আশঙ্কা, হয়ত এভাবেই তনু হত্যার ঘটনাটাও ধামাচাপা পড়ে যাবে৷
তনু হিজাব পরতেন৷ তারপরও তাঁকে ধর্ষণের করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ এতে কি বোঝা গেল না যে, তথাকথিত শালীন পোশাক পরলেও নারীরা নিরাপদ নয়? আপনার মতামত জানতে চাই৷ তাই লিখুন নীচের ঘরে৷