সন্ধান মিললো পিকাসোর শতশত চিত্রকর্মের
৪ ডিসেম্বর ২০১০ফ্রান্সের লিবারাশিওঁ পত্রিকা খুব সম্প্রতি এই খবর দিয়েছে৷ এইসব চিত্রকর্ম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এগুলোর আনুমানিক মূল্য ছয় কোটি ইউরোর কাছাকাছি৷ গুয়েনেকের সংগ্রহে চিত্রকর্ম, কোলাজ আর রেখাচিত্র মিলিয়ে পিকাসোর ২৭১টি কাজ ছিল বলে পত্রিকাটিতে প্রকাশ৷ গুয়েনেক বলেছেন, পিকাসোর স্ত্রী এই সব চিত্রকর্ম তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন৷ তাঁর দাবি, খোদ চিত্রকরের জ্ঞাতসারেই ছবিগুলো তাঁকে দেন মাদাম পিকাসো৷ দক্ষিণ ফ্রান্সে পিকাসোর একাধিক বাড়িতে তিনি ইলেকট্রিসিয়ানের কাজ করেছিলেন৷ সেই সময়েই তিনি উপহারগুলো পান বলে তিনি জানিয়েছেন৷
পিকাসোর পুত্র, পিকাসো ফাউন্ডেশনের প্রধান ক্লোদ পিকাসো গুয়েনেক'এর এই দাবি মানতে রাজি নন৷ এইসব ছবির কোন কোনটাতে শিল্পীর সই নেই, কোনটাতে নেই তারিখ৷ ক্লোদ পিকাসো ‘লিবারাসিওঁ' পত্রিকাকে বলেছেন, এটা ঠিক যে পিকাসো কখনও কখনও রেস্তোরাঁয় বসে ন্যাপকিনের ওপর স্কেচ করেছেন৷ তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর আঁকা ছবি বন্ধুদের উপহার দিয়েছেন৷ কিন্তু এতগুলো কাজ তিনি দিয়ে দেবেন কাউকে, এটা সম্ভবই না৷ এইগুলোকে চুরি করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে পিকাসোর উত্তরাধিকারী মামলা দায়ের করেছেন৷
গুয়েনেক তার কাছে থাকা চিত্রকর্মগুলো যে পাবলো পিকাসোর তা নিশ্চিত করতে গত সেপ্টেম্বর মাসে ক্লোদ পিকাসোকে চিঠি লেখেন৷ দেখা হয় দুজনের৷ গুয়েনেক'এর বক্তব্য বিশ্বাস করতে পারেননি পিকাসো পুত্র৷ সেপ্টেম্বর মাসেই ক্লদ অভিযোগ দায়ের করেন৷ পিকাসোর এই মহামূল্য কাজগুলো যাতে হারিয়ে না যায়, তার জন্য উত্তরাধিকারীরা আইনের আশ্রয় নিয়ে এগুলোকে তালাবদ্ধ রাখার ব্যবস্থা করেছেন৷ পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছে গুয়েনেককে৷
পিকাসোর এই কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে নয় খানা কিউবিস্ট আঙ্গিকের অত্যন্ত বিরল কোলাজ, আছে পিকাসোর ‘ব্লু পিরিয়ড'এর একটি ওয়াটার কালার, প্রায় ৩০টি লিথোগ্রাফ, ২০০'রও বেশি স্কেচ৷ আছে পিকাসোর প্রথম স্ত্রী অলগা খখলোভার একখানা প্রতিকৃতিও৷
পিকাসো ফাউন্ডেশনের আইনি পরামর্শদাতা ক্লাউডিয়া আন্দ্রিউ বলেছেন, ‘‘সম্পূর্ণ অজানা সব কাজ আমরা আবিষ্কার করেছি, এমন সব কাজ যেগুলোর কোন ছবি কোন বইতে কখনও ছাপা হয়নি৷ তাই ছবিগুলো কোথা থেকে আদৌ এল সে সম্পর্কে আমাদের বৈধ প্রশ্ন রয়েছে৷'' তিনি বলেন, ছবিগুলো নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা গেছে৷ কীভাবে কোথা থেকে এই ছবিগুলো এল, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এখন আদালতের৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক