সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান সিইসির
১৫ নভেম্বর ২০২৩আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি ভোটের তারিখঘোষণা করে এ আহ্বান জানান৷
রাজনৈতিক মতভেদ দূর করতে সংলাপেই আস্থা রাখছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার৷ সরাসরি না বললেও জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এমন ইঙ্গিত মিলেছে৷
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে সব দলের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সর্বদা স্বাগত জানাবে৷ পারষ্পরিক প্রতিহিংসা, অবিশ্বাস ও অনাস্থা পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা ও সমাধান অসাধ্য নয়৷ পরমতসহিষ্ণুতা, পারষ্পরিক আস্থা, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা টেকসই ও স্থিতিশীল গণতন্ত্রের জন্য আবশ্যকীয় নিয়ামক৷''
অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল৷
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন প্রশ্নে, বিশেষত নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতির প্রশ্নে, দীর্ঘসময় ধরে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ বহুদলীয় রাজনীতিতে মতাদর্শগত বিভাজন থাকতেই পারে৷ কিন্তু মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংসতা হলে তা থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারে৷''
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মতৈক্য প্রয়োজন বলেও জানান সিইসি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দলকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব সংঘাত ও সহিংসতা পরিহার করে সদয় হয়ে সমাধান অন্বেষণ করতে৷ জনগণকে অনুরোধ করব সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে৷''
সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি৷ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে, কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়, নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়৷ তাতে জনমতেরও শুদ্ধতর প্রতিফলন ঘটে৷''
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে নিজের ভাষণের শেষ লাইনে এসেও নির্বাচনের বর্জনের হুমকি দিয়ে আসা রাজনৈতিক দলগুলোকে কাছে টানার চেষ্টা করেছেন সিইসি৷ তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ আপামর জনগণের আন্তরিক অংশগ্রহণ ও সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করছি৷''
নির্বাচনের অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচনের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা৷ কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাহসী, সৎ, দক্ষ ও অনুগত পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করে প্রার্থী হিসেবে আপনাদের নিজ নিজ অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা কার্যত: আপনাদেরকেই করতে হবে৷''
নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা সৎ, নিরপেক্ষ ও অবিচল থেকে আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন৷ আমাদের বিশ্বাস স্ব স্ব অবস্থান থেকে সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্বশীল আচরণ ও আবশ্যক ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ হবে৷ দেশে ও বহির্বিশ্বে প্রশংসিত ও বিশ্বাসযোগ্য হবে৷ দেশের জনশাসনে জনগণের জনপ্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে৷ গণতন্ত্র সুসংহত হবে৷''
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল:
ভোট গ্রহণ: ৭ জানুয়ারি
মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন: ৩০ নভেম্বর
মনোনয়ন যাচাই বাছাই: ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর
আপিল নিষ্পত্তি: ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর
মনোনোয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন: ১৭ ডিসেম্বর
প্রতীক বরাদ্দ: ১৮ ডিসেম্বর
রিটার্নিং কর্মকর্তা: ৬৬ জন
মোট ভোটার: ১১ কোটি ৯৭ লাখ
ভোট কেন্দ্র: ৪২ হাজার
বুথের সংখ্যা: ২ লাখ ৬২ হাজার