সমকামীরাও সন্তান নিতে পারবেন ফ্রান্সে
৩০ জুন ২০২১যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিল ফরাসি পার্লামেন্ট। সমকামী নারী এবং একক নারীও সন্তান ধারণ করতে পারবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আইভিএফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্তান ধারণ করতে আর কোনো বাধা থাকল না তাদের। দীর্ঘ দুই বছর ধরে এই আইনটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সের পার্লামেন্ট আইনটিকে বৈধতা দিল।
লড়াই কঠিন ছিল। ফরাসি শাসকদল দীর্ঘদিন ধরেই এই আইনটি চালু করতে চাইছিল। কিন্তু বাদ সাধছিল রক্ষণশীল বিরোধীরা। প্রায় দুই বছর ধরে এই আইনটি নিয়ে ফরাসি পার্লামেন্টে বিতর্ক হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ ঘণ্টার বিতর্ক। ১২ হাজার বার আইনটির পরিবর্ধন এবং পরিবর্তন হয়েছে। শেষপর্যন্ত বিপুল ভোটে ফরাসি নিম্নকক্ষে আইনটি পাশ হয়েছে। আইনের পক্ষে ভোট পড়েছে ৩২৬টি। বিপক্ষে ১১৫। দীর্ঘদিন রক্ষণশীল অধ্যুষিত সেনেটে আইনটি আটকে ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত মাক্রোঁ এবং তার মন্ত্রিসভার চেষ্টায় আইনটিকে পাশ করানো সম্ভব হয়েছে।
কী আছে নতুন আইনে
ফ্রান্সে আইভিএফ চিকিৎসা এতদিন আইনসিদ্ধ ছিল। অর্থাৎ, স্বাভাবিক ভাবে সন্তান না হলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার ব্যবস্থা। এছাড়াও স্পার্ম ডোনারও আইনসিদ্ধ ছিল। কিন্তু একক নারী কিংবা সমকামীদের ক্ষেত্রে আইভিএফ ট্রিটমেন্ট আইনসিদ্ধ ছিল না। যদিও সমকামী বিয়ে সে দেশে বৈধ। বিদেশে গিয়ে বহু নারী আইভিএফ ট্রিটমেন্ট করিয়ে সন্তান নিয়ে ফিরতেন। এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ফরাসি পার্লামেন্টে বিতর্ক চলছিল। শেষপর্যন্ত একটি আইন তৈরির কথা হয়। কিন্তু রক্ষণশীালরা কোনোভাবেই এই আইনের পক্ষে ছিল না।
আইভিএফ ট্রিটমেন্ট ছাড়াও এই আইনে বলা হয়েছে, স্পার্ম ডোনারের মাধ্যমে কারো সন্তান হলে সেই সন্তান ১৮ বছর বয়সে গিয়ে জানতে চাইতে পারে তার বায়োলজিক্যাল বাবা কে? প্রশ্ন এলে ঠিক উত্তর দিতে হবে। সন্তান চাইলে বাবার সঙ্গে দেখাও করতে পারে। তবে সারোগেসি নিয়ে এই আইনে কোনো কথা বলা হয়নি। অন্য নারীর গর্ভে সন্তান রাখার পদ্ধতির নাম সারোগেসি। এ বিষয়ে নতুন আইন কোনো মন্তব্য করেনি। ট্রান্সজেন্ডারদের স্পার্ম ডোনেট করা নিয়েও নতুন আইনে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
এলজিবিটি প্রতিক্রিয়া
দীর্ঘদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন করছিলেন ফ্রান্সের এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি। আইন পাশ হওয়ার পরে তারা জানিয়েছেন, তারা খুশি। তবে এখনো সমস্ত দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি। অন্যদিকে, ফ্রান্সের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, দ্রুত আইনটিকে চালু করা হবে যাতে এ বছরের শেষেই সন্তানের মুখ দেখতে পান নারীরা।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি)