ইইউ ও ইরানের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
৩ জানুয়ারি ২০১২সমঝোতা আলোচনার ব্যাপারে অগ্রগতি
মঙ্গলবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রামিন মেহমানপারাস্ত বলেছেন যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা আলোচনার ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থানের প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছে তারা৷ এই প্রস্তাব পেলেই ইরান তাদের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে জানাবে এবং যোগাযোগের মধ্য দিয়ে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছনো সম্ভব হবে৷ তবে ইইউ পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশ্টন-এর মুখপাত্র মাইকেল ম্যান বলেছেন, গত অক্টোবর মাসে ক্যাথরিন অ্যাশ্টন ইরানের পরমাণু বিষয়ক মধ্যস্থতাকারী সাইদ জালিলির কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন সেটির জবাব তারা এখনও দেয়নি৷ তাই সেই চিঠির জবাব পাওয়ার পরই সমঝোতা আলোচনার ব্যপারে অগ্রগতি হতে পারে বলে উল্লেখ করেন ম্যান৷
ইরানের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফ্রান্সের বক্তব্য
এদিকে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে বলে আবারও মন্তব্য করলেন ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রী আলাঁ জুপে৷ ফরাসি গণমাধ্যম ই-টেলি'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমার এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই৷ আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ ব্যাপারে বেশ সুস্পষ্টভাবেই জানিয়েছে৷ তাই ইরানের সাথে সমঝোতা আলোচনার পাশাপাশি তাদের উপর আরো অবরোধ আরোপ করতে চায় ফ্রান্স৷'' মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইরানের উপর আরোপিত সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার উল্লেখ করে জুপে বলেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজিও চান যে, ইইউ একইভাবে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং তাদের তেল রপ্তানির উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুক৷ আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ইইউ বৈঠকে এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা৷
পারস্য উপসাগরে উত্তেজনা
অন্যদিকে, ইরান পারস্য উপসাগরে দশ দিনব্যাপী নৌ মহড়া সম্পন্ন করার পর এবার মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিয়ে হুঁশিয়ারি শুনিয়েছে মঙ্গলবার৷ দেশটির সেনা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আতাওল্লাহ সালেহি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘পারস্য উপসাগর দিয়ে যাওয়া মার্কিন যুদ্ধজাহাজ যেন তার সাবেক ঘাঁটিতে আর ফিরে না আসে৷'' তিনি এ ব্যাপারে আরো এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘এটিই একমাত্র সতর্কবার্তা৷ এরপর এমন সতর্কবার্তা আর দেওয়া হবে না৷'' তাঁর এসব কথা ইরানের সামরিক বাহিনীর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে৷
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
দু'দিন আগে আরোপ করা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে ডলারের তুলনায় ইরানের মুদ্রার মান রেকর্ড হারে কমে গেছে৷ গত দুই দিনে এর মান কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ৷ তবে ইরানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের মুদ্রার মূল্য কমার সাথে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোন সম্পর্ক নেই৷ বরং তারা নিজেদের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী করতে বিকল্প পন্থায় এগুচ্ছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র মেহমানপারাস্ত৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক