‘সম্পর্ক হবে দুই দেশের জনগণের মধ্যে'
২৭ জুন ২০১৪সুষমা স্বরাজের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক হয় শুক্রবার সকালে ঢাকার একটি হোটেলে৷ খালেদার সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ছিলেন৷ এ সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার পঙ্কজ শরণও উপস্থিত ছিলেন৷ ৪০ মিনিটের এই বৈঠকে খালেদা-সুষমা একান্তে কথা বলেন ১০ মিনিট৷
দুই বছর আগে ২০১২ সালে নতুন দিল্লি সফরের সময়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল খালেদার৷ তখন সুষমা ছিলেন লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা৷
শুক্রবারে ঢাকায় বৈঠকের পর বিএনপি-র দুইজন সিনিয়র নেতা বৈঠকের বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন৷
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খালেদা জিয়া উল্লেখ করেছেন, তা হলো বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত৷ তথাকথিত সংসদ জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত করে না৷ বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ তার প্রতিবেশী দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে চায় কিনা, তা আলোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে৷''
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বলেছেন, ‘‘ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের বিশেষ কোনো দল নয়, জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বলে দেশটির পররাষ্ট্র খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন৷''
তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ খালেদা জিয়া দ্বিপক্ষীয় অমীমাংসিত বিষয়গুলো দ্রুত আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান করার ওপর গুরুত্ব দেন৷ জবাবে সুষমা স্বরাজ আশ্বস্ত করেছেন, এ বিষয়ে তাঁদের অগ্রগতি হয়েছে৷ ভারতের ভেতরে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কাজ চলছে৷''
তিনি জানান, ‘‘খালেদা জিয়া বৈঠকে সুষমা স্বরাজকে বলেন, ভারতের নির্বাচনের ফলাফলে মানুষের মনে আশা জেগেছে যে, ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন অধ্যায় তারা দেখতে পাবে৷ পারস্পরিক লাভ ও সমমর্যাদার ভিত্তিতে এ সম্পর্ক গড়ে উঠবে৷''
দেশে নতুন নির্বাচন ও সংলাপ নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে শমসের মবিন বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি৷ এসব আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷ দেশে জনগণই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে৷''
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘‘সুষমার সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার আপত্তি করেছিল৷ এসব আপত্তি অতিক্রম করেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ভারত যে কোনো দল নয়, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চায়, এই বৈঠক তারই প্রতিফলন৷''
বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন ও রিয়াজ রহমান উপস্থিত ছিলেন৷
বুধবার রাতে তিনদিনের ঢাকা সফরে এসে এর আগে বৃহস্পতিবার সুষমা স্বরাজ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গেও৷
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা ছাড়ার আগে সুষমা স্বরাজ সংসদ ভবনে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ তিনি রওশনকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে৷