‘সরকারের মদতেই হচ্ছে ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন'
৪ ডিসেম্বর ২০২০ডয়চে ভেলে বাংলার সাপ্তাহিক ইউটিউব টকশো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়'-এর এবারের পর্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত৷ এবারের পর্বের প্রশ্ন ছিল, মূর্তি বা ভাস্কর্যের মতো ইস্যুগুলো কি দেশের মূল সমস্যাগুলো আড়ালে রাখছে?
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরাসরি অভিযোগের তির ছোঁড়েন সরকারেরদিকে৷ তিনি বলেন, ‘‘পাগলকে দিয়ে সাঁকো নাড়াচ্ছে সরকার রাজনৈতিক সুবিধার জন্য৷ খাদ্য, ওষুধের এমন দাম যেখানে (বাড়ছে), মানুষ সঠিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা পাচ্ছে না, সেখানে তখনই হচ্ছে এমন সরকারপ্রণোদিত বিতর্ক৷ ইমামসাহেবরাই বা কী করে এই ফাঁদে পা দিলেন, তা আমি জানি না৷ ধর্ম থাকবে আমাদের অন্তরে, উপাসনালয়ে, মন্দির মসজিদে৷ এর সাথে রাজনীতি মেশালে সুবিধাবাদী শ্রেণির লাভ হলেও আসলে ধর্মের ক্ষতি৷ ইসলাম সাম্যের ধর্ম, বাকস্বাধীনতার ধর্ম৷ অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল অবস্থার ধর্ম৷ আজকের এই আন্দোলন ভুল হচ্ছে, ইসলামোফোবিয়াকে উসকে দেবে৷ ইসলামকে প্রাগৈতিহাসিক ধর্মে পরিণত করবে৷''
সঞ্চালক প্রশ্ন রাখেন যে, আসলেই কার পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন ধর্মীয় নেতারা বা আদৌ দিচ্ছেন কি? উত্তরে ডা. চৌধুরী বলেন, ‘‘সরকারি মদতে হচ্ছে এটা৷ অ্যাটেনশন ডাইভার্শন করা হচ্ছে৷ জনগণ একদিকে আন্দোলন করছে দেশের গতি ফেরানোর জন্য৷ এতদিন যে ছাত্রলীগ বদনামের ভাগী হয়ে ছিল, সে উঠে আসছে আবার৷ অন্যদিকে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পুরোপুরি জড়ানো৷ সেটাকে ভুলিয়ে দেবার জন্যই এই আন্দোলন করা হচ্ছে৷''
সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগকে খারিজ করলেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত৷ তার বক্তব্য, ‘‘আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের সকল মানুষই মৌলবাদী গোষ্ঠীর আচরণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে৷ দল হিসাবেও আওয়ামী লীগ এর বিপক্ষে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যে সকল অ্যাক্টিভিস্টরা রয়েছেন, তারাও এর প্রতিবাদ করেছেন৷ এখানে নিশ্চুপ বলতে কেবল বাম দলেরা ও বিএনপি৷ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো কয়েকজন কথা বলেছেন৷ কিন্তু বাকিরা চুপ৷ মৌলবাদীরা আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ, এরা বেশি বাড়লে আওয়ামী লীগই তাদেরকে প্রতিহত করে৷''
এবারের পর্বে এছাড়াও আলোচিত হয় দেশে দুর্নীতির বাড়বাড়ন্তের বিষয়ে সরকারের জবাবদিহিতা নিয়ে৷ পাশাপাশি, উঠে আসে তথাকথিত সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে ক্ষমতাসীন দলের সম্পর্কের কথাও৷ উঠে আসে বিভিন্ন ঘটনায় আইনি তৎপরতা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার প্রসঙ্গ৷
এসএস/এসিবি