1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সহসাই সমাধান দেখছে না নিরাপত্তা পরিষদ

২৯ এপ্রিল ২০১৮

নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা খুব দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান দেখছেন না৷ তবে তারা বলেছেন, এই বিষয়টিকে তারা হরিয়ে যেতে দেবেন না৷ আর রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারকে নিরপদে ফেরত নিতে হবে৷

https://p.dw.com/p/2wrlW
প্রতিনিধি দলের সংবাদ সম্মেলনছবি: Getty Images/AFP/S. Jahan

নিরপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল কুয়েত থেকে সরাসরি কক্সবাজার আসেন শনিবার বিকেলে৷ সেখানে তারা বিকেলেই বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷

রবিবার তাঁরা বাংলাদেশ মিয়ানমরার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থারত প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গাকে দেখতে যান৷ এরপর কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন৷ এই ক্যাম্পে সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা আছেন৷ ক্যাম্পে ১০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে তিনভাগে ভাগ হয়ে কথা বলে প্রতিনিধি দলটি৷ পরে তাঁরা মুখোমুখি হন সংবাদিকদের৷

UN-Delegation besucht Rohingya-Flüchtlingscamp in Bangladesch
নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় এভাবেই প্ল্যাকার্ড হাতে নিজেদের দাবির কথা জানান রোহিঙ্গা শরণার্থীরাছবি: Getty Images/AFP/S. Jahan

প্রতিনিধি দলের প্রধান পেরুর গুস্তাভো মেজা কোয়াদ্রার বলেন, ‘‘আমরা এই শরণার্থী সংকট দেখে খুব উদ্বিগ্ন৷ আমরা এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি৷ রোহিঙ্গাদের জন্য যেন কিছু করতে পারি, তাই সমস্যাটিকে আরও ভালোভাবে জানার জন্য আমরা এখানে এসেছি৷''

UN-Delegation besucht Rohingya-Flüchtlingscamp in Bangladesch
একশ’ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলে প্রতিনিধি দলটিছবি: Getty Images/AFP

কুয়েতের প্রতিনিধি মনসুর আল উতাইবি বলেন, ‘‘আমরা এখান থেকে মিয়ানমারে যাবো এবং সেখান থেকে নিউইয়র্কে ফিরে বিষয়টি নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনা করবো৷ তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আমরা কোনও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি না৷''

যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি কারেন পিয়ার্স বলেন, ‘‘আমরা এখান থেকে মিয়ানমারে যাবো৷ তাদের কাছ থেকে শুনতে চাইবো, সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হতে পারেন তারা৷ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আমরা নিরাপত্তা পরিষদে সমর্থন দেয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবো এবং রোহিঙ্গাদের উপকারে আসে এমন সিদ্ধান্ত নেব৷''

‘রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে তাঁরা হারিয়ে যেতে দেবেন না’

প্রতিনিধি দলের খবর সংগ্রহে কক্সবাজারে অবস্থানরত বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ শাহরিয়ার জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তাঁরা নিশ্চিত করেছেন যে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে হারিয়ে যেতে দেবেন না৷ তবে তাঁরা এও মনে করেন যে, খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে না৷ তাঁরা মূলত রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে এসেছেন৷ পরিদর্শনের ভিত্তিতে নিউইয়র্কে গিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তারা৷''

তিনি বলেন, ‘‘এই প্রতিনিধি দল মিয়ানমারেও যাবেন৷ তাঁরা রাখাইনে যাবেন৷ রাখাইনের দু'টি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শন করতে চেয়েছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু মিয়ানমার তাতে সম্মত হয়নি৷ তারা হেলিকপ্টারে করে এরিয়েল ভিউ-এর সুযোগ পাবেন৷''

শেখ শাহরিয়ার জামান বলেন, ‘‘নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন৷''

মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল শহীদুল হক (অব.) মনে করেন, ‘‘নিরাপত্তা পরিষদের এই উদ্যোগ সুফল বয়ে আনবে এবং এটা কার্যকর একটা উদ্যোগ৷''

‘সিকিউরিটি কাউন্সিলের এই উদ্যোগে একটা কিছু হতে পারে’

তিনি বলেন, ‘‘এই সময়ে আমরা চার ধরণের উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি৷ ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট, সিকিউরিটি কাউন্সিল, কমনওয়েলথ আর সামনে ওআইসি সম্মেলন৷ আমার মনে হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একটা কার্যকর উদ্যোগ চায়৷ তার প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি৷''

তিনি বলেন, ‘‘এখন যা বিশ্ব পরিস্থিতি তাতে রাশিয়ার অবস্থান কি হবে তা বলা মুশকিল৷ তবে ভারত ও চীন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পক্ষেই অবস্থান নেবে৷ আমার মনে হচ্ছে সিকিউরিটি কাউন্সিলের এই উদ্যোগে একটা কিছু হতে পারে৷''

নিরপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল সোমাবার ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবে৷ এরপর তাঁরা এখান থেকেই মিয়ানমার যাওয়ার কথা রয়েছে৷

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট থেকে এ পর্যন্ত  মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা এসেছেন৷ ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত এসেছেন ৮৭ হাজার৷ সব মিলিয়ে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার কথা বলছে মিয়ানমার৷ আর এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআর যুক্ত হয়েছে৷

রোহিঙ্গা সমস্যা কি আদৌ সমাধান হবে? মতামত লিখুন নীচের ঘরে৷