1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সহায়তার দাবি বীরাঙ্গনা, অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের

হোসাইন আব্দুল হাই২৬ ডিসেম্বর ২০১২

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও তাদের অবদানের কথা তেমনভাবে তুলে ধরা হয়নি নতুন প্রজন্মের সামনে৷ তাই ডয়চে ভেলে ২০১১ সালের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের উপর বিশেষ ফিচার সম্প্রচার৷

https://p.dw.com/p/1792W
ছবি: AFP/Getty Images

টানা দুই বছর ধরে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক পরিবেশনাগুলোর শুরুটা ছিল সিরাজগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাফিনা লোহানীর বীরত্বের কাহিনী৷ তবে বীর নারী সাফিনা শুধু একাত্তরে যুদ্ধ করেই দায়িত্ব পালন শেষ করেননি, এখনও তিনি লড়ে যাচ্ছেন যুদ্ধের নয় মাসে পাক সেনাদের থাবায় নির্যাতিত অসহায় মা-বোনদের অধিকারের জন্য৷ সাফিনা লোহানী সহ অনেকেই এসব নির্যাতিত মা-বোনদের অধিকারের দাবি জানিয়েছেন৷ কারণ বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত এসব ত্যাগী নারীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে বরং বীরাঙ্গনা খেতাব দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে৷ ফলে এসব অসহায় নির্যাতিত নারীরা পরিবারে কিংবা সমাজে কোথাও জায়গা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন৷ অথচ সরকারের কাছ থেকেও তারা কোন ভাতা কিংবা সহায়তা পাচ্ছেন না৷ এসব বীরাঙ্গনা নারীদের অনেকে সমাজেও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন৷

তবে এমনই একজন বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, যিনি একাত্তরে পাক সেনাদের পাশবিক নির্যাতনের কথা মানুষের কাছে প্রকাশ্যে তুলে ধরতে দ্বিধা করেন না৷ বরং তিনি এসব কথা মানুষকে জানিয়েছেন এবং সমাজে বীরাঙ্গনাদের যথাযথ মর্যাদার জন্য কাজ করছেন নিজের সামাজিক আন্দোলন ও সৃষ্টিশীল ভাস্কর্য কর্মের মধ্য দিয়ে৷

Rowshan Jahan Shathi 1967
আমরা তোমাদের ভুলবো না....ছবি: Archiv Rowshan Jahan Shathi

পুরুষ যোদ্ধাদের পাশাপাশি নারী মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং স্বাধীন দেশে তাদের অবস্থা ও কর্মকাণ্ড নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন করতে গিয়ে আমাদের কাছে উঠে এসেছে বঙ্গমাতাদের আত্মত্যাগের চিত্র৷ কিন্তু একইসাথে ফুটে উঠেছে হতাশাব্যঞ্জক এবং লজ্জাষ্কর কিছু পরিস্থিতি৷ যেসব বঙ্গমাতার কারণে বাংলার বীর ছেলেরা যুদ্ধ জয় করে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন সেসব বঙ্গবীর মাতাদের অনেকেই এখনও বঞ্চনা এবং অবহেলার একেবারে নিচের ধাপে মানবেতর জীবন যাপন করছেন৷ সেটা কি বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মের জন্য লজ্জার বিষয় নয়? যেমন এখনও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বঞ্চিত চট্টগ্রামের দুই সহোদরা মুক্তিযোদ্ধা আলো রানী এবং মধুমিতা বৈদ্য৷

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪২তম বার্ষিকী উদযাপন করছে দেশের আপামর জনতা৷ অথচ এখনও সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে বাগেরহাটের অকুতোভয় নারী মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুন্নেসা মীরাকে৷

Week 52/12 Women1: Round up of Women Freedom Fighters Feature 1 - MP3-Mono

একইভাবে গত ৪১ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী হেলেন৷ সরকারের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একাধিক মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের বক্তব্যেও উঠে এসেছে যে দুই সাহসী সহোদরা গীতা ও ইরা করের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তারাও এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি৷

এছাড়া টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাতেমা খাতুনকে দীর্ঘদিন ধরে সখীপুর পৌরসভায় ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করতে হয়েছে৷ বর্তমানে অজানা রোগে তাঁর শরীর-মন দুটোই ভেঙ্গে পড়েছে৷ এখন আর কাজে যেতে পারেন না বলে পৌরসভা থেকে বেতনও পান না৷ টাকার অভাবে সঠিক চিকিৎসা করতে না পেরে যেন নিভৃতে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন ফাতেমা৷ এসব বীর নারীদের অসহ্য যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটানো কি জাতির দায়িত্ব নয়? এসব বীর বঙ্গমাতাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার কি কেউ নেই? নারী মুক্তিযোদ্ধাদের বঞ্চনা এবং অসহায়ত্বের কাহিনী শুনে জাতির বিবেকের কাছে এমনই কঠিন প্রশ্ন তুলেছেন আমাদের শ্রোতা ও পাঠকরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান