সহিংসতার দায় নির্বাচন কমিশনের
১৬ মার্চ ২০১৪তাঁদের মতে, প্রধানত নির্বাচন কমিশন এর জন্য দায়ী হলেও সরকারও দায় এড়াতে পারেনা৷ বিশ্লেষকরা উপজেলা পরিষদের সামনের নির্বাচনে আরো সহিংসতার আশঙ্কা করছেন৷ কারণ এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে নির্বাচন চর দখলের মতো হবে বলে তাঁরা মন্তব্য করেন৷
উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায়ে শনিবার ২জন নিহত হওয়া ছাড়াও ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ব্যালট পেপারে সিল ও ভোটকেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে৷ নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে ২১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল করেছে৷ আর নির্বাচনে সহিংসতা এবং কারচুপির অভিযোগে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ কোথাও কোথাও রবিবার হরতাল ডাকা হয়েছে৷
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তৃতীয় দফায় এসে উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা আরো বেড়ে গেল৷ নির্বাচন কমিশনের শিথিলতার কারণে এখন ভোট বাদ দিয়ে কেউ কেউ পেশী শক্তির মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে নিতে চাইছেন৷ এটা নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত৷'' তিনি বলেন, ‘‘সংসদের মতো উপজেলা নির্বাচন একতরফা নয়৷ সব দলই অংশ নিচ্ছে৷ ফলে ভোটকেন্দ্র দখল, পাল্টা দখলের ঘটনা ঘটছে৷ সামনে আরো যে নির্বাচন আছে তাতে এই প্রবণতা বাড়বে৷'' তিনি বলেন, ‘‘এই সহিংসতার দায় নির্বাচন কমিশনের৷ তাদের বার বার সতর্ক করার পরও তারা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি৷ সরকারও এর দায় এড়াতে পারেনা৷''
এদিকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শনিবারের নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছে৷ দেখে মনে হয়েছে তাদের যেন কোনো দায়িত্ব নেই৷'' তিনি বলেন, ২‘‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন ব্যবস্থা চরম হুমকির মুখে পড়বে৷''
হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও সরকারের ইচ্ছা শনিবারের নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে৷ ফলে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ হবেনা তা নিশ্চিত৷'' তাঁর মতে, ‘‘উপজেলা পরিষদের সামনের নির্বাচনে সহিংসতা আর কেন্দ্র দখলের ঘটনা আরো বাড়বে৷''
নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং সুষ্ঠু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন৷ প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিব উদ্দিন আহমেদ ছুটিতে আছেন৷
শনিবারের তৃতীয় দফায় ৮১টি উপজেলা পরিষদের নিবাচনের পর ২৩ মার্চ উপজেলা নির্বাচনের ৪র্থ পর্যায়ে ৯২টি উপজেলায় এবং ৩১ মার্চ ৫ম পর্যায়ে ৭৪টি উপজেলায় নির্বাচন হবে৷ এপ্রিলে ৬ষ্ঠ ধাপে ২২টি উপজেলার নির্বাচন হওয়ার কথা৷ তবে ৬ষ্ঠ ধাপের তফশিল এখনো ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন৷