‘অবৈধ আটক' অবসানের দাবি
১৫ আগস্ট ২০১৬গত শনিবার নিউইয়র্ক থেকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্থা দুটি এ দাবি জানায়৷ তবে বাংলাদেশের পুলিশ মীর আহমেদ বিন কাসেম আলী ও হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে আটকের কথা অস্বীকার করেছে৷
মীর আহমেদ বিন কাসেম আলীকে ৯ আগস্ট ও হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে গত ৪ আগস্ট ডিবি পরিচয়ে সাদা পোশাকধারীরা তুলে নিয়ে যায় বলে তাদের পরিবারে পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে৷
তবে যৌথ বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক চম্পা প্যাটেল দাবি করেন, ‘‘মীর আহমেদ ও হুম্মামকে আইন শৃংখলা বাহিনীর হেফাজতে আটক রাখা হয়েছে৷ কিন্তু সরকার অব্যাহতভাবে তা অস্বীকার করে চলেছে৷ দু'জনের সাথেই পরিবার বা আইনজীবীদের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও হাজির করা হয়নি৷''
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘বিএনপির সদস্য হুম্মামকে ৪ অগাস্ট আদালতে হাজিরা দেয়ার জন্য তার মায়ের সাথে যাওয়ার সময় আটক করা হয়৷ তার মায়ের দাবি মতে, সাদা পোষাকের মানুষ, যাদের কয়েকজনের কাছে অস্ত্র ছিল, তারা জোর করে হুম্মামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তাদের সাথে নিয়ে যায়৷ অন্যদিকে মীর আহমেদ সুপ্রিমকোর্টের একজন আইনজীবী৷ তাকে ৯ অগাস্ট একইভাবে সাদাপোষাকধারীরা আটক করে নিয়ে যায়৷ তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী এবং এক আত্মীয় সেখানে ছিলেন৷''
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘এই দু'জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে৷ যদিও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, তাদের দু'জনকেই ১২ আগস্ট সকালে ব়্যাব হেড কোয়ার্টারে দেখা গেছে৷''
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘‘গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঘন্য হত্যাকান্ডসহ বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অপরাধে দোষীদের খুঁজে বের করার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে৷ কিন্তু অবৈধ ও গোপনে আটকে না রাখার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি৷ অবিলম্বে হুম্মাম ও মীর আহমদের অবৈধ আটকের অবসান হওয়া উচিত৷''
কিন্তু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার(মিডিয়া) মাসুদুর রহমান এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হুম্মাম বা মীর আহমেদকে পুলিশ আটক করেনি৷ তারা কেথায় আছেন এটা আমাদের জানার কথা নয়৷ তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো অভিযোগও করা হয়নি৷''
এদিকে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তাদের পরিবারের কাছ থেকে ওই দু'জনকে তুলে নেয়ার যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তাতে সন্দেহ করার কারণ আছে যে তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী'র কারোর হাতে আটক হয়েছেন৷''
নূর খান আরো বলেন, ‘‘আমরা অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখেছি বেশ কিছু ঘটনায় আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনী প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে তাদের আটক দেখানো হয়েছে, অথবা ভিন্ন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷''
প্রসঙ্গত, হুম্মামের বাবা সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃতু্যদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ২০১৫ সালে নভেম্বরে ৷ আর মীর আহমেদের পিতা মীর কাসেম আলীর মৃতু্যদণ্ডের ওপর রিভিউ আবেদনের শুনানি এ মাসেই হওয়ার কথা রয়েছে৷