১০০ বছর ধরে সাগরের পরিমাপ!
২১ নভেম্বর ২০১৬হেলিগোল্যান্ডের বন্দর ছেড়ে কারেন উইল্টশায়ার ও তাঁর সতীর্থেরা উত্তর সাগরে পানির নমুনা নিতে যাচ্ছেন৷ ওশেনোগ্রাফারদের সাগরে ভয় করলে চলে না৷ এছাড়া তাদের ধৈর্য থাকা চাই৷ সাগরের পরিবর্তন একদিনে চোখে পড়ে না৷ গবেষকরা বহু প্রজন্ম ধরে হেলিগোল্যান্ডের উপকূলে উত্তর সাগরের উপর নজর রেখে চলেছেন৷
কারেন উইল্টশায়ার জানালেন, ‘‘আমরা গত একশ' বছর ধরে এখানে পানির তাপমাত্রা মেপে আসছি৷ প্রত্যেক দিন সকালে ওপরের দিকের পানির তাপমাত্রা মাপা হয়, এই ধরুন এক মিটার গভীরে৷ বলতে কি, ঠিক একই থার্মোমিটার দিয়ে৷ আমরা যে মেপেছি, সেটা ভালোই, কেননা তা থেকে দেখা গেছে যে, তাপমাত্রা বেড়েছে৷''
গবেষকরা প্ল্যাঙ্কটনও পরীক্ষা করে দেখেন৷ পানির তাপমাত্রা বাড়ার অর্থ, পানির নীচে জীবজগতেরও পরিবর্তন ঘটছে৷ যেমন সাম্প্রতিক কয়েক বছরে ব্রাউন অ্যালজি, অর্থাৎ বাদামি শ্যাওলার পরিমাণ বেড়েছে৷'' এই সব খুঁটিনাটি থেকে সাগরের অবস্থা যাচাই করা যায়৷ আর সাগরের অবস্থার উপর গোটা পৃথিবীর অবস্থা নির্ভরশীল৷ কারেন উইল্টশায়ার বলেন, ‘‘সাগর না থাকলে জমিতেও আবহাওয়া সম্পূর্ণ অন্যরকম হতো৷ কাজেই সাগর কীভাবে কাজ করে তা বোঝা অত্যন্ত জরুরি – বিশেষ করে এখন, যখন সমস্তই বদলে যাচ্ছে, পৃথিবীর চারপাশে বায়ুমণ্ডল যেভাবে বদলে যাচ্ছে, কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে, বিশ্বের উষ্ণায়ন বেড়ে চলেছে৷ কাজেই আমাদের বুঝতে হবে, সাগরে তার প্রতিক্রিয়া কী হবে৷''
সাগরের পানির নমুনা নেওয়া ওশেনোগ্রাফারদের কাজের একটা বড় অংশ৷ বোট ফিরল হেলিগোল্যান্ডে৷ পানির নমুনাগুলো এবার পরীক্ষাগারে যাবে৷ এতদিন ধরে সাগরের একই অংশের পানির নমুনা বিশ্বের আর কোথাও নেওয়া হয়েছে বলে জানা নেই৷
একটি দরজার পিছনে রয়েছে তথাকথিত ‘ফেরি বক্স'৷ ফেরি বক্স হলো একটি স্বয়ংক্রিয় পরিমাপ পদ্ধতি, যা দিনরাত কাজ করে৷ গত দশ বছর ধরে এখানে দিনরাত সাগরের পানি পাম্প করা হচ্ছে৷ তাপমাত্রা, লবণের মাত্রা, পিএইচ ভ্যালু – এ সব কিছু বাড়ছে না কমছে, কখন বা কোন মরসুমে, তা গবেষকরা জানতে পারেন ফেরি বক্সের সংগৃহীত তথ্য থেকে৷
প্রতিবেদন: মাবেল গুন্ডলাখ/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ